ঋতুপর্ণা-তহুরাদের এশিয়ান কাপ স্বপ্নের পর এবার ইতিহাস গড়ল অনূর্ধ্ব–২০ নারী ফুটবল দলও। সেরা তিন রানার্সআপের একটি হয়ে প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব–২০ নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ ভিয়েনতিয়েনের নিউ লাওস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গ্রুপসেরা হওয়ার জন্য অন্তত ড্র প্রয়োজন ছিল পিটার বাটলারের দলের। প্রথমার্ধে তৃষ্ণা রানীর গোলে ১-১ সমতায় থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে হোঁচট খায় বাংলাদেশ, হজম করে আরও পাঁচ গোল। ফলে ৬-১ ব্যবধানে হেরে রানার্সআপ হয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয় তাদের।
বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ভর করছিল ‘ই’ গ্রুপের লেবানন–চীন ম্যাচের ওপর। সমীকরণ ছিল সহজ—লেবানন হারলেই সেরা তিন রানার্সআপের মধ্যে থাকবে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত চীনের কাছে ৮-০ ব্যবধানে হারায় লেবানন, আর তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের ঐতিহাসিক মূলপর্বে যাওয়া।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২০ দলের এশিয়ান কাপে এটি প্রথম অংশগ্রহণ। এর আগে দেশের নারী ফুটবল ইতিহাসে মূলপর্বে খেলার স্বাদ পেয়েছিল অনূর্ধ্ব–১৭ দল (২০০৫, ২০১৭ ও ২০১৯)।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দুর্দান্ত সূচনা করেছিল সাগরিকারা। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে হারায় ৩-১ গোলে, দ্বিতীয় ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে উড়িয়ে দেয় ৮-০ ব্যবধানে। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ চার গোল করেছেন তৃষ্ণা রানি, যার মধ্যে একটি হ্যাটট্রিক রয়েছে পূর্ব তিমুরের বিপক্ষে। তিন গোল করেছেন মোসাম্মত সাগরিকা।
২০২৪ সাল থেকে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত ছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–২০ নারী দল, যার মধ্যে ঘরের মাঠে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের কৃতিত্বও রয়েছে। তবে আজ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে সেই ধারা থেমে গেলেও মূল লক্ষ্য—এশিয়ান কাপের টিকিট—হাতে এসে গেছে।
আগামী ১ থেকে ১৮ এপ্রিল থাইল্যান্ডে বসবে ১২ দলের এশিয়ান কাপের আসর। স্বাগতিক থাইল্যান্ড ছাড়াও বাছাই পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে উত্তর কোরিয়া, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীনসহ মোট ১২টি দল। এই প্রতিযোগিতার সেরা চার দলই খেলবে সেপ্টেম্বরে পোল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য অনূর্ধ্ব–২০ নারী বিশ্বকাপে।
বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য তাই সুযোগ শুধু ইতিহাস গড়ার নয়, বরং বিশ্বকাপের স্বপ্ন ছোঁয়ারও।
মন্তব্য করুন