

দলে নেই সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। প্রতিপক্ষ ম্যাচের শুরুতে সমতায় ফিরিয়েছে। শেষ ম্যাচে লেগে আছে যোগ্যতা অর্জনের চাপ। তারপরও পর্তুগাল যেন জানত— আজ রাতে তাদেরই উৎসব হবে। এস্তাদিও দো ড্রাগাঁওয়ে আর্মেনিয়ার বিপক্ষে ৯ গোলের দাপুটে জয় শুধু বিশ্বকাপের টিকিটই নিশ্চিত করেনি, বরং দেখিয়ে দিয়েছে— পর্তুগাল দলের ভবিষ্যৎ রোনালদো না থাকলেও উজ্জ্বল।
২০০২ সালের পর আর কোনো বিশ্বকাপ মিস করেনি পর্তুগাল। ২০২৬-ও তার ব্যতিক্রম হলো না। রোনালদোর আয়ারল্যান্ড ম্যাচের লাল কার্ডজনিত নিষেধাজ্ঞা প্রথমে আলোচনায় থাকলেও মাঠে রবার্তো মার্তিনেজের দল দেখিয়েছে, তার অনুপস্থিতিতে ‘শূন্যতা’ নয়, বরং সুযোগ তৈরি হয় নতুন তারকাদের।
ম্যাচের শুরুতে রেনাতো ভেইগার গোল পর্তুগালকে এগিয়ে দেয়, যদিও অফসাইডের আভাস ছিল। এরপর আর্মেনিয়া ১৮ মিনিটে স্পেরস্তিয়ানের গোলে সমতায় ফিরে উত্তেজনা জাগায়। কিন্তু এর পরের গল্পটা একতরফাই— পর্তুগাল যেন নিজেরা ঠিক করেছিল শেষ ম্যাচেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করবে, আর সেটা করবে আক্রমণের ঝড় তুলে।
প্রথমার্ধেই পাঁচ গোল— গনসালো রামোস, জোয়াও নেভেসের জোড়া গোল (যার একটি অসাধারণ ফ্রি-কিক), আর ব্রুনো ফার্নান্দেজের পেনাল্টি। বিরতিতে স্কোরলাইন ৫-১।
দ্বিতীয়ার্ধ ছিল পুরোপুরি উৎসব। ব্রুনোর আরও দুটি গোল, নেভেসের হ্যাটট্রিক, আর শেষে ফ্রান্সিসকো কনসেসাওয়ের গোলে থামে স্কোরবোর্ড ৯-১।
দর্শকসারিতে দেখা যায় রোনালদো মাস্ক পরে আসা ভক্তদের উল্লাস। যেন তারা বলছে— তারকা না থাকলেও দলকে ভালোবাসা কমে না, আর দলও তাদের প্রতিদান দিয়েছে গোলের পর গোল দিয়ে।
নয় গোলের এই জয়ের পর পর্তুগাল তাদের ইতিহাসের নবম বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে ইউসেবিওর দল তৃতীয় হয়েছিল। এবারকার স্কোয়াড সেই সাফল্য ছাড়িয়ে যেতে পারে কি না— এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
এদিকে আয়ারল্যান্ড হাঙ্গেরির মাঠে ৯৫তম মিনিটে গোল করে ৩-২ ব্যবধানে জিতে ইউরোপীয় প্লে-অফে জায়গা পাকা করেছে।
পর্তুগালের রাতটি ছিল গোলের, ছন্দের, ভবিষ্যতের ঘোষণা দেওয়ার। আর সবচেয়ে বড় কথা— ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো না থাকলেও পর্তুগালের বিশ্বমঞ্চে থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
মন্তব্য করুন