

সাংবাদিক লাঞ্ছনা, আয়োজকদের শর্তভঙ্গ এবং চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগে লাতিন বাংলা সুপার কাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ স্থগিত করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ফলে আগামী বৃহস্পতিবার জাতীয় স্টেডিয়ামে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার দুই ক্লাবের অনূর্ধ্ব-২০ দলের মধ্যকার নির্ধারিত ম্যাচটি আর হচ্ছে না।
সূচি অনুযায়ী, ১১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় আর্জেন্টিনার ক্লাব অ্যাথলেটিকো চার্লোনের অনূর্ধ্ব-২০ দলের বিপক্ষে ব্রাজিলের সাও বার্নার্দো অনূর্ধ্ব-২০ দলের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল। তবে মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জাতীয় স্টেডিয়ামের বরাদ্দ বাতিলের পাশাপাশি ম্যাচ স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহকারী পরিচালক রুহুল আমিন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে জানানো হয়, এএফবি লাতিন বাংলা সুপার কাপ-২০২৫ আয়োজন উপলক্ষে ৫, ৮ ও ১১ ডিসেম্বর—এই তিন দিনের জন্য শর্তসাপেক্ষে জাতীয় স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আয়োজক প্রতিষ্ঠান এএফবি বক্সিং প্রমোশন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ অনুযায়ী, ম্যাচ শুরুর আগে টিকিট বিক্রির পূর্ণাঙ্গ হিসাবসহ বিক্রয়কৃত অর্থের ৫০ শতাংশ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হয়নি। একই সঙ্গে খেলা শেষে নিজ দায়িত্বে স্টেডিয়ামের স্থাপনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার শর্তও উপেক্ষিত হয়েছে। এ ছাড়া স্পনসরশিপ ও সম্প্রচার স্বত্ব বাবদ প্রাপ্ত অর্থের বিবরণ এবং নির্ধারিত অংশ পরিশোধ নিয়েও কোনো সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়নি।
এর পাশাপাশি সোমবার রাতে জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচ চলাকালে এক ক্রীড়া সাংবাদিকের ওপর বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের হামলার ঘটনাও গুরুতর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মন্ত্রণালয় এটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক উল্লেখ করে জানিয়েছে, আয়োজকদের কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও উদ্ধত আচরণের কারণে সাংবাদিকরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে ১১ ডিসেম্বরের ম্যাচ আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আয়োজকদের ৯ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার মধ্যে ৫ ও ৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ম্যাচ দুটি থেকে প্রাপ্ত টিকিট বিক্রি, স্পনসরশিপ ও সম্প্রচার স্বত্ব সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ হিসাবসহ সংশ্লিষ্ট অর্থের ৫০ শতাংশ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রতিযোগিতা ঘিরে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আয়োজকরা এর আগে দুই ফুটবল কিংবদন্তি কাফু ও ক্যানিজিয়ার আগমনের ঘোষণা দিলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের বাংলাদেশ সফরও প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
সব মিলিয়ে লাতিন বাংলা সুপার কাপের ভবিষ্যৎ এখন আয়োজকদের শর্ত পূরণ ও মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে।
মন্তব্য করুন