কোষের মূল সূত্রগুলো লেখা থাকে ডিএনএতে। সম্প্রতি সিঁড়ির মতো দেখতে এই জৈবিক কাঠামোটির একটি নতুন কাজ আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েইল করনেল মেডিসিনের গবেষকরা। তারা দেখেছেন হাতের কাছে একটি বিশেষ উপকরণ পেলে ডিএনএও প্রোটিনের মতো আচরণ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে নিজের মতো করে একটি ত্রিমাত্রিক কাঠামো তৈরি করেই প্রোটিন সাজতে পারে ডিএনএ।
অনেক আগ থেকেই জিএফপি নামে একটি প্রোটিনকে বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে আসছেন গবেষকরা। এর পুরো নাম গ্রিন ফ্লুরোসেন্ট প্রোটিন। যার কাজ হলো সবুজ আলো ছড়ানো। জেলিফিশ থেকে পাওয়া প্রোটিনটি অনেক সময় ডিএনএ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে ট্যাগ তথা চিহ্ন হিসেবে কাজ করে। সেই জিএফপির একটি উপাদান হলো ফ্লুরোফোর। ওটাই মূলত আলো ছড়ানোর কাজটি করে। তবে এর জন্য ফ্লুরোফোরকে সক্রিয় হতে হয়। ওই ফ্লুরোফোরকে ডিএনএর কিছু অংশের সঙ্গে মেশানোর পরই দেখা গেল ডিএনএ নিজে থেকেই ওই ফ্লুরোফোরকে সঙ্গে নিয়ে এমনভাবে নিজের কাঠামো বদলে দিল যা ফ্লুরোফোরটিকে সক্রিয় করেছে। আর এর পরই সবুজ আলো ছড়ানো শুরু করল ওই ডিএনএ।
ক্রায়ো-ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপে চোখ রেখে ড. লুইজ প্যাসালাকুয়া ও তার দল দেখতে পেলেন, ডিএনএটি এমনভাবে ভাঁজ হয়েছে যাতে করে এর ভেতর চারটি জাংশন তৈরি হয়েছে। আর ওই ‘বাক্সের’ ভেতরই আটকা পড়ে ফ্লুরোফোর। ডিএনএ ভাঁজ হওয়ার ক্ষেত্রে এর নিউক্লিওবেইজের (এ বি সি ডি হিসেবে যেগুলোকে উল্লেখ করা হয়) কাঠামোটি ব্যবহৃত হয়েছে আঠা হিসেবে।
গবেষণা দলের সদস্য ড. ফেরে ডি আমারে জানালেন, ‘আমরা যা দেখলাম, এখানে ডিএনএন কিন্তু প্রোটিন হওয়ার চেষ্টা করছে না। বরং এটি জিএফপির কাজটাই করছে, তার নিজের মতো করে।’
এ গবেষণার ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিএনএকে নতুন করে কাজে লাগানো যাবে বলে জানালেন গবেষকরা। ফ্লুরোসেন্ট তথা আলো ছড়ানো ডিএনএ মলিকিউল তৈরি করা সম্ভব হলে দ্রুত অনেক ডায়াগনস্টিক টেস্ট করা যাবে।
‘চিকিৎসায় ডিএনএ-ভিত্তিক নতুন ধরনের জৈবিক উপকরণ তৈরি করা যাবে এর ফলে।’ জানালেন গবেষণা দলের প্রধান ড. জেফরি।
মন্তব্য করুন