মরক্কোয় শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ভয়ে-আতঙ্কে দ্বিতীয় রাতও সড়কে পার করেছেন হাজার হাজার মানুষ। দুদিন পার হলেও পরাঘাতের শঙ্কায় এখনো বিধ্বস্ত বাড়িঘরে ফিরে যেতে পারছেন না তারা। অন্যদিকে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবিতদের খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
গত শুক্রবার শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। এরই মধ্যে এই ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল আটলাস পর্বতমালার ওকাইমেডিনের স্কি রিসোর্টের কাছে। এ জায়গাটি দেশের চতুর্থ বৃহত্তম শহর মারাকেশ থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই মারাকেশ শহরই।
মরক্কোর কর্তৃপক্ষ বলছে, এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ১২ জন নিহত এবং এক হাজার ৪০৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকায় হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবারের মতো শনিবার রাতও খোলা আকাশের নিচে কাটিয়েছেন মারাকেশ শহরের বাসিন্দারা। ভূমিকম্পপরবর্তী পরাঘাতের বিষয়ে সতর্কতা জারি থাকায় তারা নিজ নিজ ঘরে ফিরতে পারছেন না।
অলিভারেই পার্কটি শহরের মাঝামাঝি এলাকায় অবস্থিত। এই পার্কে শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের শত শত মানুষ কাঁথা-কম্বল মুড়ি দিয়ে অস্থায়ী তাঁবু ফেলে রাতযাপন করেছেন। ভয়াবহ ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতার পর একসঙ্গে তারা যেন একটু জিরিয়ে নিতে চাইছেন। কেউ কেউ আবার খাবারের সঙ্গে জামা-কাপড়ও নিয়ে এসেছেন। ঘর ছেড়ে আরও কয়েক রাত সড়কে পার করতে হবে, এমন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এমন কাজ করছেন তারা।
যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রথম ৭২ ঘণ্টা জীবিতদের উদ্ধারের ‘সুবর্ণ সময়’। এই কথাটি মাথায় রেখেই যেন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উদ্ধারকাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। তাদের লক্ষ্য একটাই যত দ্রুত সম্ভব ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া ও আহতদের উদ্ধার করা।
মন্তব্য করুন