কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:০৬ পিএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৭:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শি-বাইডেন বৈঠক থেকে যে ৫ বিষয় উঠে এলো

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোয় গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২০২১ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা তাদের দ্বিতীয় মুখোমুখি বৈঠক। চার ঘণ্টাব্যাপী শি-বাইডেনের এই বৈঠকে বৈশ্বিক ও দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। তাদের এই বৈঠকে আলোচিত মূল পাঁচটি বিষয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

সামরিক যোগাযোগ

বৈঠক শেষে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সামরিক সম্পর্ক পুনরায় জোড়া লাগানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন বাইডেন ও শি। দুই নেতার বৈঠকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল সম্ভবত এই সামরিক সম্পর্ক মেরামত।

গত বছর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষিদের তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় চীন। এরপর চলতি বছরের গোয়েন্দা ‍বেলুনকাণ্ডে দুই দেশের সম্পর্কে আরও অবনতি হয়।

দুই নেতার বৈঠকের আগে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন দুই দেশের মিলিটারি টু মিলিটারি যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। কেননা তিনি মনে করেন যে এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজন।

মার্কিন সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগন এই উদ্যেগকে স্বাগত জানিয়েছে। পেন্টাগনের এক মুখপাত্র বলেছেন, সংকট বা সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে এমন ভুল বোঝাবুঝি ও হিসাব নিকাশ এড়াতে আমাদের দুই সামরিক বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগের পথ খোলা রাখা অপরিহার্য।

তাইওয়ান ইস্যু

চীনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বাইডেনের সঙ্গে আলোচনায় তাইওয়ান ইস্যুকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি।

স্ব-শাসিত দ্বীপ অঞ্চলটিকে নিজেদের অংশ বলে মনে চীন। এমনকি প্রয়োজন হলে বল প্রয়োগের মাধ্যমে এর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানিয়ে রেখেছে বেইজিং। তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক না রাখলেও এ বিষয়ে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতার’ নীতি মেনে চলে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে তাইওয়ানকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র দিয়ে থাকে ওয়াশিংটন।

বৈঠকে শি বাইডেনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত তাইওয়ানকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করা। চীনের সঙ্গে দ্বীপ অঞ্চলটির শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলন তাদের সমর্থন করতে হবে। এই পুনর্মিলন চীন বাস্তবায়ন করবে। এটা কোনো ভাবেই থামানো যাবে না।

অর্থনৈতিক ইস্যু

দেশে কিংবা বিদেশে চীনের কাছে সবার আগে অর্থনীতি। এ জন্য দুই প্রেসিডেন্টের বৈঠকের শুরুই হয় অর্থনীতি দিয়ে। বৈঠকে শি বলেছেন, গত বছর ইন্দোনেশিয়ার বালিতে তাদের দুজনের বৈঠকের পর অনেক ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, করোনা মহামারি সামলে উঠেছে বিশ্ব। তবে এখনো এর নজিরবিহীন প্রভাব রয়ে গেছে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠছে বৈশ্বিক অর্থনীতি। তবে এর গতি মন্থর।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ককে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক হিসেবে উল্লেখ করে শি বলেছেন, তার ও বাইডেনের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। এ জন্য তারা একে অপরের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন না।

ফেন্টানাইল পাচার রোধ

বিশ্বে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একে অপরকে সাহায্য করার কথা জানিয়েছে দুপক্ষ। অবৈধ ফেন্টানাইলের জোয়ার রোধ করার জন্য রাসায়নিক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।

ফেন্টানাইল অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে মৃত্যুর ঘটনা অনেক বেড়েছে। গত বছর প্রায় ৭৫ হাজার মার্কিন নাগরিকের মৃত্যুর জন্য দায়ী এই শক্তিশালী সিনথেটিক ওপিওড বা কৃত্রিম ওপিওড।

কৃত্রিম ওপিওড মূলত এক ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ। চীনা কোম্পানি শুধু এই ওষুধ উৎপাদন করে না, তারা এসব ওষুধ তৈরির রাসায়নিকের জোগান দিয়ে থাকে।

গাজা যুদ্ধ

শি-বাইডেনের বৈঠকে গাজা যুদ্ধের কথাও উঠে আসে। সম্প্রতি মানবিক দিক বিবেচনায় গাজায় সংঘাত সাময়িক বন্ধ করতে প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। দুই দেশই এই পরিষদের স্থায়ী সদস্য।

গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলি নাগরিক হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক ইসরারেয়লি ও বিদেশি নাগরিককে জিম্মি করে নিয়ে আসে হামাস। এই দিন থেকেই হামাসকে নিশ্চিহ্নের নামে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাড়ে সাত হাজারের বেশি নারী ও শিশু রয়েছে।

এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই গাজা পেরিয়ে তা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কা করছেন নিপারত্তা বিশ্লেষকা। এমন উদ্বেগের মধ্যে বাইডেন শিকে বলেছেন, চীন যেন ইরানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। একই সঙ্গে এই সংঘাত সম্প্রসারণে উসকানি দেয় এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বেনামাজি ব্যক্তিকে সাক্ষী রাখলে বিয়ে বৈধ হবে কি?

বিসিবির নির্বাচন হতে বাধা নেই

দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ‘বিশেষ অস্ত্র’ মোতায়েন উত্তর কোরিয়ার

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করেছে সরকার : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কনমেবল ইভল্যুশন লিগ / অতিরিক্ত সময়ে নাটকীয় গোল, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে ব্রাজিল

শিগগির দল হিসেবে আ.লীগের বিচারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হবে

তিন নদীতে বাড়তে পারে পানি, চার জেলায় বন্যার পূর্বাভাস

দুদকের মামলায় খালাস পেলেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র

ধানক্ষেতের আইলে মরদেহ, পাশে পড়ে ছিল কলার ব্যাগ

অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধ কর্মশালার সনদ প্রদান

১০

‘ভারত আমার মাতৃভূমি’, হঠাৎ কেন এই কথা বললেন পাক ক্রিকেটার

১১

হঠাৎ ঝড়ে লন্ডভন্ড সব

১২

একটানা অনেক দিন চিয়া সিড খেলে শরীরে ৫ সমস্যা দেখা দিতে পারে

১৩

কোরআন অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী আদালতে

১৪

দার্জিলিংয়ে নিহত ১৪, সব পর্যটন স্পট বন্ধ

১৫

বাবা-মা ও স্ত্রীকে ‘প্রতিবন্ধী’ বানিয়ে ভাতা তুলছেন ইউপি সদস্য

১৬

ভারতের তিন রাজ্যে কাশির সিরাপ নিষিদ্ধ

১৭

মারা গেছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সন্ধ্যা

১৮

ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়ে বিরল সম্মাননা দিল স্প্যানিশ ক্লাব

১৯

সুপারি চুরি নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষক নিহত

২০
X