ভারতের কেরালা রাজ্যের ত্রিশূরের এক শান্ত পাড়ায় হঠাৎই নেমে এলো বিভীষিকার ছায়া। বুধবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় পাদিয়ুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ৭৪ বছরের বৃদ্ধা মণি এবং তার ৪৩ বছরের কন্যা রেখার পচাগলা দেহ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, দুজনকেই খুন করা হয়েছে এবং সেই খুনের নেপথ্যে রয়েছেন রেখার স্বামী প্রেমকুমার, যিনি এর আগেও খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ওই বাড়ি থেকে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ পেয়ে বিষয়টি জানান মণির বড় মেয়ে সিন্ধুকে। সিন্ধু বাড়ির পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে দেখেন মেঝেতে পড়ে রয়েছে মণি ও রেখার নিথর দেহ। তিনি তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন।
পরে পুলিশ এসে দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
তবে প্রাথমিক আলামতে স্পষ্ট- এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারণ ঘটনাস্থল থেকেই উদ্ধার হয়েছে প্রেমকুমারের হাতে লেখা একটি হুমকির চিঠি, যা তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হয়ে উঠেছে।
তদন্তে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিহত রেখার স্বামী প্রেমকুমার কোট্টায়াম জেলার বাসিন্দা। এর আগেও তিনি এক নারীকে বিয়ে করেছিলেন এবং সেই স্ত্রী ২০১৯ সালে খুন হন।
ওই ঘটনায় প্রেমকুমারকেই প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জামিনে ছাড়া পাওয়ার কিছুদিন পরই দ্বিতীয় স্ত্রী রেখার সঙ্গেও শুরু হয় অশান্তি। এমনকি রেখা থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও দায়ের করেন।
পুলিশের প্রশ্ন- সেই অভিযোগের জেরেই কি এবার স্ত্রীর পাশাপাশি শাশুড়িকেও নির্মমভাবে হত্যা করলেন প্রেমকুমার? তদন্তে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে। প্রেমকুমার বর্তমানে পলাতক, তাকে খুঁজে বের করতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে পুলিশ।
ত্রিশূরের এই জোড়া খুনের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একাধিক স্ত্রীর প্রতি এমন হিংস্র মনোভাব এবং বারবার হত্যার পুনরাবৃত্তি নতুন করে প্রশ্ন তুলছে জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের উপর নজরদারির কার্যকারিতা নিয়েও। এখন দেখার, প্রেমকুমারকে কত দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা যায়।
সূত্র : আনন্দবাজার অনলাইন
মন্তব্য করুন