মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব কমাতে ও ভোগ বৃদ্ধির জন্য ভারত সরকার শত শত পণ্যের কর কমিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বুধবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানান, পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) কাঠামোকে সহজ করা হয়েছে। পুরোনো চার স্তরের পরিবর্তে এখন দুটি স্তর করা হয়েছে, ৫ শতাংশ এবং ১৮ শতাংশ। সিগারেটের মতো ক্ষতিকারক পণ্যের ওপর পৃথক ৪০ শতাংশ কর বহাল থাকবে।
খাদ্যদ্রব্য, স্কুল সরবরাহ ও বীমা সস্তা হবে। কিন্তু আমদানি করা মদ ও প্রিমিয়াম গাড়ি আরো ব্যয়বহুল হবে। এই ঘোষণায় শেয়ারবাজার ইতোমধ্যেই চাঙা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, কর কমানোর কারণে সরকারের ৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত রাজস্ব ক্ষতি হতে পারে।
নতুন কর হার ২২ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে, যে সময় ভারতে উৎসব মরশুম শুরু হবে। এই সময়ে এসি, টিভি ও অন্যান্য গৃহস্থালী ইলেকট্রনিকসের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কোটাক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্রীপাল শাহ জানান, নতুন কর ছাড় ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৬০ শতাংশ ভোগ বৃদ্ধি করবে। তিনি বলেন, এটি সরাসরি চাহিদা বাড়াবে, ব্যবসা ও আয় বৃদ্ধি পাবে এবং পরবর্তী ত্রৈমাসিকের কর্পোরেট আয়ের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এ ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি কমানোর সম্ভাবনা আছে।
যদিও কর রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল রাজ্যগুলো ঘাটতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তবে কয়েকজন অর্থনীতিবিদ মনে করেন, উন্নত খরচের মাধ্যমে ক্ষতি হ্রাস পাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
বিশেষজ্ঞরা এটিও মনে করছেন যে, নতুন জিএসটি কাঠামো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক ও জরিমানা থেকে উদ্ভূত প্রভাবের বিরুদ্ধে কাজ করবে।
২০১৭ সালে চালু হওয়া জিএসটি দেশটির রাজস্ব বৃদ্ধি ও ব্যবসা সহজ করার লক্ষ্য নিয়ে এসেছে, তবে জটিল কাঠামোর কারণে বিশেষজ্ঞরা পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। সংশোধিত কাঠামো সেই জটিলতার অনেক অংশ দূর করছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে সাধারণ মানুষ ও ছোট ব্যবসার জন্য ‘ব্যাপক কর সুবিধা’ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।
সামাজিক মাধ্যম এক্সের পোস্টে মোদি জানান, নতুন জিএসটি সংস্কার কৃষক, মধ্যবিত্ত, নারী, যুবক এবং ছোট ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেবে এবং ব্যবসা করা সহজ করবে।
মন্তব্য করুন