কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৫, ০৮:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ইরানের জনগণকে বিদ্রোহ করার ডাক দিয়ে নেতানিয়াহুর বার্তা

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি : সংগৃহীত

ইরানের জনগণের উদ্দেশে বিদ্রোহের আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি ইরানে ইসলামি শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনতার ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

নেতানিয়াহু বলেন, “গেল কয়েক দশক ধরে যে অশুভ ও নিপীড়ক শাসকগোষ্ঠী আমাদের ঘাড়ে চেপে বসে রয়েছে, তাদের নামানোর এখনই সময়। আপনারা আপনাদের পতাকা ও ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারের ছায়াতলে আসুন। নিপীড়নবাদী শাসন থেকে মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হন। যে সুযোগ আপনাদের সামনে এসেছে, তাকে গ্রহণ করুন।’

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে ইসরায়েলের উদ্বেগ অনেক দিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু নেতানিয়াহুর প্রকৃত লক্ষ্য হলো দেশটির ইসলামিক শাসন ব্যবস্থার পতন। ধারণা করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক হামলার পেছনেও রয়েছে সেই রাজনৈতিক ও কৌশলগত উদ্দেশ্য- অর্থাৎ, শাসনকে দুর্বল ও অস্থির করে দেওয়া।

নেতানিয়াহু বলেন, আমাদের অভিযান ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে ছিল না। বরং আমরা আঘাত হেনেছি সেই কট্টর ইসলামি শাসনের ওপর, যারা অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে, নারীদের অধিকার হরণ করেছে এবং সংখ্যালঘুদের দমন করে এসেছে।

তিনি আরও দাবি করেছিলেন যে, ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান ও শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাসহ অন্তত ২০ জনকে নিশানা করে হত্যা করা হয়েছে। এই অভিযান ইরানে অস্থিরতা ও বিভ্রান্তিতে অবদান রাখছে বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

তবে, যদি ইরানে শাসন ব্যবস্থার পতন হয় তাহলে এর পরিণতি কী হতে পারে বা কে নেতৃত্ব নেবে- এ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসির বিশ্লেষক মাইকেল সিং মনে করছেন, ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপের পেছনে একটা সুস্পষ্ট কৌশলগত লক্ষ্য রয়েছে- তা হলো, ইরানে শাসন পরিবর্তন। তারা চাইছে, ইরানের জনগণ জেগে উঠুক এবং স্বেচ্ছায় তাদের সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াক।

তবে বাস্তবতা হলো, ইরানের জনগণ আদো এক ছাতার নিচে ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে কিনা- তা স্পষ্ট নয়। ২০২২ সালের ‘উইমেন, লাইফ, ফ্রিডম’ আন্দোলন চলাকালে ব্যাপক বিক্ষোভ হলেও তা নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি ও গ্রেপ্তারের মুখে দমন করা হয়। অনেক নারী ও শিশুসহ অসংখ্য বিক্ষোভকারী প্রাণ হারান। সেই আন্দোলনকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রকাশ্যে নৈতিক সমর্থন দিয়েছিলেন, কিন্তু তা রাজনৈতিক ও বাস্তব ক্ষেত্রে স্থায়ী হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেতানিয়াহুর এই ‘বিদ্রোহের ডাক’ মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে। সবাই নজর রাখছে যে, ইরানের জনগণ এই আহ্বানে কী ধরনের সাড়া দেবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অবশেষে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার

দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

পে স্কেল নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে যে সিদ্ধান্ত নিল কমিশন

গাড়ির গ্যারেজে ঝুলছিল চালকের মরদেহ

হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

কাউকে ভোট দেওয়া ফরজ নয়, ইমান নিয়ে মরা ফরজ : ছারছীনা পীর

ফিফা দ্য বেস্টে কাকে বেছে নিলেন মেসি?

ভারত আ.লীগের ৩০ হাজার সন্ত্রাসী পালছে : হাসনাত

বিশ্বকাপে রেকর্ড প্রাইজমানি ঘোষণা ফিফার

নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা জাতীয় পার্টির, তবে...

১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রকাশ্যে গুলি, আহত যুবক

১১

রাজশাহী বিভাগে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই : বজলুর রশীদ

১২

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করলে জনগণ ক্ষমা করবে না : ইশরাক

১৩

একসঙ্গে ছয় বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে নিল রংপুর

১৪

বিজয় দিবসে শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রদল নেতা তারিকের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

১৫

খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের নিরাপত্তা টিমের প্রধানের পরিচয়

১৬

ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ / মান্না ও ইসলামী ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

১৭

ফয়সালকে ভাড়া দেওয়া গাড়ির মালিক যা বললেন আদালতকে

১৮

জননিরাপত্তার অবনতি নিয়ে উদ্বেগ 

১৯

২০২৬ মৌসুম পর্যন্ত মেসির সাথে মায়ামিতেই থাকছেন সুয়ারেজ

২০
X