বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে উত্তর-পশ্চিম ইরানের উর্মিয়া হ্রদ গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাবে। ইরানের পরিবেশ বিভাগের সামুদ্রিক ও জলাভূমি বিষয়ক উপকমিশনার আহমেদরেজা লাহিজানজাদেহ তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এককালের বৃহত্তর হ্রদ ছিল এটি।
আহমেদরেজা বলেন, ২০২৫ সালের ১ আগস্ট হ্রদের পানির স্তর ছিল ১,২৬৯.৭৪ মিটার। এর আয়তন ৫৮১ বর্গকিলোমিটারে সংকুচিত হয়ে গেছে। এর ধারণক্ষমতা প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ঘনমিটারে নেমে এসেছে।
আইআরজিসি অনুমোদিত তাসনিম নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এটি গত বছরের তুলনায় তীব্র ও অভূতপূর্ব হ্রাস নির্দেশ করে।
কর্মকর্তা বলেন, জলপ্রবাহের অভাবের অর্থ শরৎকালে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না এবং হ্রদটি পুনরুজ্জীবিত করা গেলেও এটি ১৯৯৫ সালের আদর্শ অবস্থায় ফিরে আসবে না। এটি ৩২ বিলিয়ন ঘনমিটার জল ধারণ করতে সক্ষম ছিল।
দুই দশক ধরে বারবার সরকারি প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দীর্ঘস্থায়ী স্বল্প তহবিল, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং দুর্বল বাস্তবায়নের কারণে হ্রদের পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।
লাহিজানজাদেহ বলেন, হ্রদের বর্তমান সংকটের পেছনে খরা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ। কিছু শহরে পানীয় জলের ঘাটতিও রয়েছে।
গত সপ্তাহে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটার ইনস্টিটিউটের প্রধান সতর্ক করে বলেন, হ্রদটি প্রত্যাবর্তনের অযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং জলাশয়ের ধারণক্ষমতার বাইরে কৃষিজমি সম্প্রসারণকে এর জন্য দায়ী করছেন তিনি।
চলতি বছর দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি অংশ খরার সম্মুখীন হচ্ছে। বৃষ্টিপাত হ্রাস পাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক পানির মজুত হ্রাস পাচ্ছে।
উর্মিয়া হ্রদ এবং জায়ানদেহ রুদ নদীর মতো প্রধান জলাশয় শুকিয়ে যাওয়া ইরানের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সংকটকে ভয়াবহ রূপ দিতে পারে। দেশটিতে পানির সংকট দেখা দিলে তা মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব। কারণ, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ সুপেয় পানির সংকটে নাস্তানাবুদ।
মন্তব্য করুন