

গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনে জাতিসংঘের ম্যান্ডেট নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ উদ্যোগ রাশিয়া, চীন এবং বেশ কয়েকটি আরব দেশের তীব্র আপত্তির মুখে পড়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, প্রস্তাবিত শাসন কাঠামোয় স্পষ্টতা নেই এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে কোনো রকম অন্তর্বর্তী ভূমিকা দেওয়া হয়নি।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের আলোচনার বিষয়ে অবগত চার কূটনীতিক জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত ‘বোর্ড অব পিস’ পুরোপুরি বাতিল করার দাবি তুলেছে ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন সদস্য রাশিয়া ও চীন। বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের সংশোধিত খসড়ায় বোর্ড অব পিসসংক্রান্ত ভাষা বজায় রাখা হলেও তাতে ফিলিস্তিনের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের উল্লেখ যোগ করা হয়েছে। আগের আগে খসড়ায় বিষয়টি না থাকায় সমালোচনা হয়েছিল।
কূটনীতিকদের মতে, এ ধরনের ভাষাগত টানাপোড়েন স্বাভাবিক হলেও গাজায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা পরিষদের প্রভাবশালী সদস্যদের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কানাডায় জি-৭ বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, প্রস্তাবটি অবিলম্বে পাস হওয়া দরকার। আমরা ভালো অগ্রগতি করছি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে প্রচারিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম খসড়ায় বলা হয়েছিল, ২০২৭ সাল পর্যন্ত গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন থাকবে এবং তাদের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করবে গঠিতব্য বোর্ড অব পিস। তবে এ প্রস্তাবে আরব দেশগুলোর কিছু অংশ এই বাহিনীতে সৈন্য পাঠাতে আগ্রহ দেখালেও তারা বলছে—স্পষ্ট ম্যান্ডেট ছাড়া অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। অন্যদিকে রাশিয়া, চীন ও আলজেরিয়া প্রথম খসড়া প্রত্যাখ্যান করেছে। নিরাপত্তা পরিষদের মাত্র দুই সদস্য ছাড়া বাকিরা সংশোধনী জমা দিয়েছে।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্পষ্ট রোডম্যাপের অনুপস্থিতি এবং ইসরায়েলি বাহিনী কখন গাজা ছাড়বে এ খসড়ায় সেটি স্পষ্ট করা হয়নি। সংশোধিত খসড়ায় বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কার সত্যিকারভাবে বাস্তবায়িত হলে এবং পুনর্গঠন এগোলে ফিলিস্তিনের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরি হতে পারে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট মানদণ্ড, মাইলফলক ও সময়সীমা অনুযায়ী স্থিতিশীলতা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা থেকে সরে যাবে। তবে বোর্ড অব পিসে কারা থাকবে এবং এটি কীভাবে কাজ করবে তা পরিষ্কার করতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানিয়েছে বেশকিছু সদস্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থিতিশীলতা বাহিনীর কাঠামো স্পষ্ট নয় এবং এই অবস্থায় তারা অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী নয়।
মন্তব্য করুন