

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগকে একটি চিঠি পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগকে রাজনৈতিক ও অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক মাস পর বুধবার এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ সময়েও ইসরায়েলের হামলা ও ত্রাণ সীমাবদ্ধতা অব্যাহত রয়েছে। চিঠিতে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে ইসরায়েল যে অভিযান চালিয়েছে, তাতে ৬৯ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ হাজার শিশু। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা এই হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ট্রাম্প লেখেন, আমি আপনাকে আহ্বান জানাচ্ছি যেন আপনি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সম্পূর্ণভাবে ক্ষমা করেন। তিনি ছিলেন এক দৃঢ় ও সিদ্ধান্তমূলক যুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী, যিনি এখন ইসরায়েলকে শান্তির পথে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি নিজেও মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে আরও দেশকে ঐতিহাসিক আব্রাহাম চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
বুধবার ইসরায়েলের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ট্রাম্পের ওই চিঠির কপি প্রকাশ করেছে। ট্রাম্প সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডানপন্থি নেতাদের প্রতি সমর্থন বাড়িয়ে চলেছেন। চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মাইলির সরকারকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের অর্থসহায়তা দিয়েছিল।
চিঠিতে ট্রাম্প আরও দাবি করেন, তিনি ‘কমপক্ষে ৩,০০০ বছরের জন্য’ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর আগে গত মাসে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে ভাষণ দেওয়ার সময়ও ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতি মামলাটি শেষ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট হার্জগকে পাঠানো এই চিঠিতে তিনি আরও সরাসরি বক্তব্য দেন।
ইসরায়েলে রাষ্ট্রপতির পদ মূলত আনুষ্ঠানিক হলেও, রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদানের সাংবিধানিক ক্ষমতা রাখেন। তবে নেতানিয়াহুর বিচার কার্যক্রম চলমান থাকায়, রায় ঘোষণার আগে হার্জগ কোনো ধরনের ক্ষমা ঘোষণা করতে পারেন না।
বুধবার ট্রাম্পের চিঠির জবাবে হার্জগ বলেন, ক্ষমা চাইলে সেটি অবশ্যই নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে।
টাইমস অব ইসরায়েলের বরাতে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করেন এবং ইসরায়েলের প্রতি তার অবিচল সমর্থন, জিম্মিদের মুক্তিতে ভূমিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও গাজার পুনর্গঠনে অবদান এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তবে বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়, রাষ্ট্রপতি একাধিকবার স্পষ্ট করে বলেছেন, যে কেউ ক্ষমা চাইবেন, তাকে প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক আবেদন দাখিল করতে হবে।
মন্তব্য করুন