পাকিস্তানের করাচির একটি জেল থেকে দুই শতাধিক কয়েদি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জেল কর্তৃপক্ষ বলছে, সোমবার করাচিতে ভূমিকম্পের সময় কয়েদিদের অস্থায়ীভাবে তাদের ব্যারাক থেকে বাইরে আনা হয়েছিল নিরাপত্তার জন্য। তখন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই কয়েদিরা জেলের গেট ভেঙে পালিয়ে যায়। খবর জিও নিউজের।
মালির জেলের পরিচালক জানান, ভূমিকম্পের সময় নিরাপত্তার স্বার্থে সার্কেল ৪ ও ৫-এর বন্দিদের বাইরে আনা হয়েছিল। সে সময় প্রায় ৬০০ বন্দি বাইরে অবস্থান করছিলেন। এই বিশৃঙ্খলার সুযোগে ২১৬ জন পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি বন্দিকে পুনরায় আটক করা হয়েছে এবং বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।
সিন্ধ প্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়া-উল-হাসান লাঞ্জার বলেন, “এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় জেল ভাঙার ঘটনা।” তিনি জানান, ৭০০ থেকে ১,০০০ বন্দি প্রধান ফটকের কাছে জমায়েত হয়েছিল, এবং প্রায় ১০০ বন্দি ফটক ভেঙে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পালিয়ে যাওয়া বন্দিদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় টার্গেট অভিযান চলছে। তদন্তে কোনো অবহেলা বা জড়িত কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সিন্ধ পুলিশের মহাপরিদর্শক গুলাম নবি মেমন বলেন, মালির জেলে অনেক মাদক সংশ্লিষ্ট এবং মানসিকভাবে অস্থির বন্দি রয়েছেন, যাদের পুনরায় খুঁজে পাওয়া সহজ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, “এই পালানো পূর্বপরিকল্পিত ছিল না, তবে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত চলবে।”
জানা গেছে, এই ঘটনায় তিনজন ফ্রন্টিয়ার কর্পস সদস্য, একজন জেল স্টাফ আহত হয়েছেন এবং একজন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ, রেঞ্জার্স, ফ্রন্টিয়ার কর্পস, এসএসইউ এবং র্যাপিড রেসপন্স ফোর্স যৌথভাবে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে।
জেল সূত্র জানায়, মালির জেলে ঘটনার সময় মোট ৬,০২২ জন বন্দি ছিল এবং পলাতক বন্দিদের বিরুদ্ধে আইনি মামলা করা হবে।
একজন পুনরায় আটককৃত বন্দি সিরাজ বলেন, “ভূমিকম্পের সময় সবাই ভয় পেয়ে গেট ভাঙতে শুরু করে। আমি অস্ত্র মামলায় আটক ছিলাম, পালিয়ে গিয়েছিলাম, পরে আবার ধরা পড়ি।”
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখনো ১৩৫ জনের বেশি বন্দি পলাতক রয়েছে। পুরো ঘটনা ঘিরে তীব্র নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
মন্তব্য করুন