অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারতের নৌবাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ‘হট স্ট্যান্ডবাই’ ছিল। সূত্র জানায়, একাধিকবার যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন থেকে ভূমি-ভিত্তিক লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য আদেশের অপেক্ষায় ছিল বাহিনী। তবে শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত আদেশ না আসায় হামলা চালানো হয়নি। খবর এনডিটিভির।
এ হামলা চালানো হলে করাচি বন্দরে অবস্থানরত পাকিস্তান নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিনসহ বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ‘ক্লাব’ সিরিজের ল্যান্ড-অ্যাটাক মিসাইল, যেগুলো ভারতের রুশ-নির্মিত ‘কিলো ক্লাস’ সাবমেরিনে একীভূত, হামলায় সেগুলো ব্যবহার করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। সূত্র মতে, ‘যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন উভয়ই উৎক্ষেপণের অপেক্ষায় ছিল।’
পাকিস্তানের নৌবাহিনী এই সময়ে প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থান নেয়। ভারতের আধুনিক প্রযুক্তি ও সামরিক দক্ষতার কারণে পাকিস্তানের ফ্রিগেট ও করভেট শ্রেণির যুদ্ধজাহাজগুলো করাচি বন্দরে অবস্থান করছিল এবং সমুদ্রে যায়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, হামলার আদেশ এলে বন্দরে থাকা এই যুদ্ধজাহাজগুলোর অনেককেই ডুবিয়ে দেওয়া সম্ভব ছিল।
যদিও ভারতীয় নৌবাহিনী সরাসরি সমুদ্রপথে হামলা চালায়নি, তবে স্থলভিত্তিক অস্ত্রব্যবস্থা ব্যবহার করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী ঘাঁটি এবং অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এসব হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও প্রযুক্তি সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।
এ সময় ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি ও আধিপত্যের কেন্দ্র ছিল বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত এবং তার অন্তর্ভুক্ত মিগ-২৯কে যুদ্ধবিমান। এই ব্যাটল গ্রুপ উত্তর আরব সাগরে ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ও আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে এবং পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর সামুদ্রিক উপস্থিতি কার্যত শূন্যে পরিণত হয়।
পাকিস্তানের একটিমাত্র নজরদারি বিমান আরএএস-৭২ সি ঈগল, যা এটিআর-৭২ প্ল্যাটফর্ম থেকে তৈরি, যুদ্ধ শেষের কয়েক দিন পর সাগরে নজরদারি করতে গেলে, তা দ্রুত ভারতীয় মিগ-২৯কে দ্বারা শনাক্ত হয় এবং আকাশেই বাধা পেয়ে উপকূলের দিকে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। ভারতের যুদ্ধবিমানটি মাত্র কয়েকশ মিটার দূরত্বে গিয়ে পাকিস্তানি বিমানের কার্যকলাপ বন্ধ করে দেয়।
অপারেশন সিঁদুর ছিল ৬ ও ৭ মে তারিখে পরিচালিত একটি উচ্চমাত্রার সামরিক প্রতিশোধমূলক অভিযান। এর মাধ্যমে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী অন্তত ৯টি পাকিস্তানি সন্ত্রাসী স্থাপনায় বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে সংঘটিত বর্বর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এ অভিযান শুরু হয়।
মন্তব্য করুন