একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখলে নিয়েছে বাজপাখি। পাখিটি সেখানে কাউকে যেতে দিচ্ছে না। কেউ ওই মাঠে প্রবেশ করলেই হামলে পড়ছে। মাথায় ঠুকরে এবং পাখা ঝাপটে নখের আঁচড় বসিয়ে আহতের ঘটনাও ঘটেছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় শিশু শিক্ষার্থীদের মাঠে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, শিশুদের শ্রেণিকক্ষের ভিতরে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাজপাখিটিকে নিবৃত্ত করতে বিশেষজ্ঞ নিয়োগের চিন্তা চলছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের একটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। বাজপাখিটি স্কুলের খেলার মাঠে বাসা বেঁধেছে এবং আক্রমণাত্মকভাবে উড়ে বেড়াচ্ছে। গ্রামের বাসিন্দাদের উপর পাখিটির ঝাঁপিয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
এই পাখিটি তার বাসা রক্ষার স্বার্থে এমনটি করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হ্যাভারিং-অ্যাট-বাওয়ারের ডেম টিপিং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ওপর আক্রমণ করতে পারে এমন আশঙ্কায় ভীত কর্তৃপক্ষ।
হ্যাভারিং কাউন্সিল জানিয়েছে, একজন বাজপাখি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যিনি কোনো ক্ষতি না করে এই শিকারি পাখিকে মাঠ থেকে সরিয়ে নিতে সাহায্য করবেন।
বাজপাখি যুক্তরাজ্যের পরিচিত শিকারি পাখি। সাধারণত এগুলো মানুষকে আক্রমণ করে না। স্কুলমাঠের বাজপাখিটি তার বাসা বা ছানা নিয়ে হয়তো আতঙ্কিত। তাই নিজের সম্পদ রক্ষা করতে আক্রমণ করছে।
যেহেতু বাজপাখি যুক্তরাজ্যের আইনে সংরক্ষিত প্রজাতি তাই বাসা ভেঙে পাখিটি মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্কুল কর্তৃপক্ষ বলেছে, আমরা পুরোপুরি বুঝতে পারি যে এই পরিস্থিতি স্কুল এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কতটা কঠিন এবং উদ্বেগজনক। আমরা দুঃখিত যে এর কোনো দ্রুত বা সহজ সমাধান নেই।
প্রধান শিক্ষিকা স্টেলা ম্যাককার্থি বিবিসিকে বলেছেন, স্কুল যতটা সম্ভব শিশুদের মাঠ থেকে দূরে রাখছে। নিয়মিত শিশুদের কাছাকাছি অন্য মাঠে নিয়ে খেলার সুযোগ করে দিচ্ছে। আমাদের ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে হয়েছে। এটি একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।
তিনি আরও বলেন, আমরা কাছের খেলার মাঠগুলো ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। এই ভেবে যে, সেগুলো নিরাপদ হবে। কিন্তু শিগগিরই আবিষ্কার করলাম যে ব্রেন্ডা (বাজপাখি) বাইরে খেলতে থাকা শিশুদের প্রতি বেশ আকৃষ্ট। আমরা সবাই মেনে নিয়েছি যে, বাজপাখিটিকে সরানোর জন্য আমরা কিছুই করতে পারি না। শিক্ষকরা বরং শিশুদের এই পাখি সম্পর্কে শিক্ষা দিচ্ছেন। আমরা এটিকে শিশুদের জন্য একটি শিক্ষার অভিজ্ঞতা হিসেবে গ্রহণ করেছি। শিশুরা পাখিটির নাম রেখেছে ব্রেন্ডা এবং ব্রেন্ডাকে রক্ষা করার জন্য পোস্টার তৈরি করেছে... তারা গল্প, প্রতিবেদন লিখছে। পরের সপ্তাহে তারা সংবাদপত্রে নিবন্ধ লিখবে, তারা শিল্পকর্মও করেছে।
মন্তব্য করুন