

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বাংলাদেশের আদালত। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালত। এই রায়ের মাধ্যমে দেশের আদালতে প্রথম কোনো ব্রিটিশ এমপির সাজা ঘোষণা করা হলো। আদালতের রায় ঘোষণার পরপরই গুরুত্বের সঙ্গে ব্রিটিশ ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
বিবিসি, স্কাই নিউজ, রয়টার্স, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টসহ সংবাদমাধ্যমগুলোর অনলাইন ভার্সনের প্রথম পাতায় খবরটি স্থান পাচ্ছে। বিবিসি শিরোনাম করেছে ‘টিউলিপ সিদ্দিকের অনুপস্থিতিতে বিচার, বাংলাদেশে আদালতের কারাদণ্ড’, রয়টার্সের শিরোনাম ‘দুর্নীতি মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের দুই বছরের কারাদণ্ড’। এ ছাড়া অন্যান্য সংবাদমাধ্যমও প্রায় একই ধরনের শিরোনামে রায়ের খবর প্রকাশ করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিকের আইনজীবীরা তার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা ফিনান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন—তার কখনো কোনো বাংলাদেশি পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি ছিল না এবং ছোটবেলা থেকেই তার কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। এ অবস্থায় তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের আদালতে বিচারের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
রায়ের বর্ণনা দিয়ে রয়টার্স বলেছে, ব্রিটেনের বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। তার মানে, রায় হলেও কার্যকারিতা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ জালিয়াতির মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দ নেওয়ায় দুদকের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় শেখ রেহানাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাকি আসামিদের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এ মামলায় পাঁচ বছর করে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
তাদের মধ্যে আসামি খুরশীদ আলম কারাগারে আটক রয়েছেন। বাকিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা রয়েছে।
এর আগে, প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনার ৭ বছর করে ২১ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া এক মামলায় তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে আজকের মামলার রায়ে নতুন করে সাজা পেলেন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক।
মন্তব্য করুন