

আলুর দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। হিমাগারে মজুত করা আলু এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকায়। অথচ গত বছর একই সময়ে দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। মৌসুমের শেষ ভাগেও দাম না বাড়ায় আশাভঙ্গ হয়েছে চাষিদের। একই সঙ্গে হিমাগার মালিকরাও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়, কারণ অধিকাংশ কৃষক ও ব্যবসায়ী আলু তুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
কৃষকদের হিসাবে, মাঠে আলু উৎপাদনে কেজিপ্রতি খরচ পড়ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। হিমাগারে রাখা, বস্তা, ভাড়া ও অন্যান্য খরচ যোগ করে এ খরচ দাঁড়াচ্ছে ৩০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।
সৈয়দপুরের তিনটি হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে খুব একটা কর্মব্যস্ততা নেই। শেডগুলো ফাঁকা, আর টুকটাক কেনাবেচা হলেও বাজারে আলুর চাহিদা নেই বললেই চলে।
কামারপুকুর এলাকার কৃষক হোসেন আলী বলেন, ‘এক কেজি আলু তুলতে আমার খরচ হচ্ছে ২০ টাকা। বস্তা, গাড়ি ভাড়া মিলিয়ে খরচ দাঁড়াচ্ছে ৩০ টাকা। অথচ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।’
আলু ব্যবসায়ী তোফায়েল আজম জানান, বাজারে আলুর ক্রেতা নেই। দামও মিলছে না। তিনি বলেন, ‘মৌসুমের শেষ ভাগে আলু বিক্রি হবে ভেবেছিলাম, কিন্তু এখন হিমাগারে ২০০ বস্তা আলু আটকে আছে। দাম না থাকায় বিক্রি করতে পারছি না।’
হিমাগার মালিকরা আশঙ্কা করছেন, আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নতুন আলুর চাষ শুরু হলে ৬০ দিনের মধ্যে তা বাজারে উঠবে। তখন পুরোনো আলু বিক্রি হওয়াই কঠিন হয়ে পড়বে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর এখনো ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ আলু হিমাগারেই পড়ে আছে। বারবার তাগাদা দিলেও কৃষক-ব্যবসায়ীরা লোকসানের ভয়ে আলু তুলতে আসছেন না।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, ‘যদি সরকারিভাবে আলু কেনা হয়, তবে কৃষকরা উপকৃত হবেন। তবে এখনো সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাইনি। এ অবস্থায় আগামী মৌসুমে আলুর চাষ কমে যাবে। আমরা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদের পরামর্শ দিচ্ছি।’
মন্তব্য করুন