কোনো ধরনের শুল্ক পরিশোধ না করেই সিগারেটের গায়ে লাগানোর ট্যাক্স স্ট্যাম্প আমদানি করতে চায় ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) বাংলাদেশ। সুদানে রপ্তানির জন্য এই সুবিধা চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানিটির এ-সংক্রান্ত আবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) এসেছে। তবে বিদ্যমান আইনে শুল্ক ছাড়া পণ্য আনার সুযোগ নেই।
এনবিআর সূত্র জানায়, বিএটি সম্প্রতি সুদানে লর্ড রিডস ব্র্যান্ডের সিগারেট রপ্তানির প্রস্তাবনা পেয়েছে। এর আলোকে সুদানে সিগারেট রপ্তানি করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশের মতো সুদানেও ট্যাক্স স্ট্যাম্প লাগিয়ে সিগারেট বাজারজাত করতে হয়। এ কারণে সুদান সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে ট্যাক্স স্ট্যাম্প আদমানি করতে চায় ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো। এ ক্ষেত্রে সুদান সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ডি লা রু এফওসি (ফ্রি অব কস্ট) সুবিধায় ট্যাক্স স্ট্যাম্প সরবরাহ করবে। বাংলাদেশের বর্তমান আইনে শুল্ক ছাড়া পণ্য আমদানির সুবিধা না থাকায় বিএটি সরকারের কাছে শুল্ক ছাড় সুবিধা চেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এ-সংক্রান্ত আবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে করলে বিষয়টি আমলে নিয়ে চিঠিটি এনবিআরে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, সুদানে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের সিগারেট রপ্তানি করা সম্ভব। এজন্য সুদানের প্রতিষ্ঠান থেকে ট্যাক্স স্ট্যাম্পে শুল্ক ছাড়া আমদানির সুযোগ চাওয়া হয়েছে। বিএটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, নতুন করে রপ্তানির জন্য এই আবেদন করা হয়েছে। সুযোগ থাকলে এনবিআর দেবে, না হলে বাতিল করবে। রপ্তানি বাড়াতে এ ধরনের সুবিধা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এনবিআর জানিয়েছে, ট্যাক্স স্ট্যাম্পের শুল্ক ৫৮ শতাংশ। আর ট্যাক্স স্ট্যাম্প কেজি হিসেবে শুল্কায়ন করা হয়। সে ক্ষেত্রে প্রতি কেজির শুল্কায়ন মূল্য ধরা হয় দুই থেকে আড়াই ডলার। বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার বা ২২০ কোটি টাকা রপ্তানি আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিএটি। এজন্য নির্ধারিত পরিমাণ ট্যাক্স স্ট্যাম্প শুল্ক ছাড়া আনতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, ট্যাক্স স্ট্যাম্প আমদানির ক্ষেত্রে নানা জটিলতা রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণে ট্যাক্স স্ট্যাম্প আসছে—এর কায়িক পরীক্ষা খুবই জটিল। আর বাংলাদেশে সিগারেটের কর মোট বাজারমূল্যের প্রায় ৯২ শতাংশ। কোনো কারণে এসব সুবিধার অপব্যবহার হলে সরকার বড় রাজস্ব ক্ষতির মুখে পড়বে বলেও জানান এনবিআর কর্মকর্তারা।