

দুই দশক আগে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রথম আলো ছড়াতে শুরু করেছিলেন তরুণ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ঠিক ২২ বছর পর সেই একই বয়সভিত্তিক আসরে আরেক পর্তুগিজ ফুটবল প্রজন্ম উৎসবের উপলক্ষ তৈরি করল।
কাতারে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রিয়াকে ১–০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেছেন টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আনিসিও ক্যাব্রাল।
দোহায় খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ছিল টুর্নামেন্টের সেরা পরিবেশ। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু থেকেই ম্যাচে দেখা যায় দুই দলের উন্মত্ত গতি ও তীব্র লড়াই। মাত্র ১৫ মিনিট পার হতেই দুয়ার্তা কুনিয়ার একটি গোল বাতিল করেন রেফারি—হফমানের ওপর ফাউলের কারণে ভিএআর সেই সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা আক্রমণ থেকে মজারের শট ফিরিয়ে দেন ফুর্তাদো, আর রোমারিও কুনিয়া এক অনন্য সেভে রুখে দেন দেশিশকুর একক প্রচেষ্টা।
এই চাপই যেন পর্তুগালকে আরও আগ্রাসী করে তোলে। ডানদিক থেকে কুনিয়ার দৌড় ও ড্রিবলের বিস্ফোরণে দিশেহারা অস্ট্রিয়ার ডিফেন্স। ৩০ মিনিট পেরোতেই তাঁর সঙ্গে মাতেুস মিদের দুর্দান্ত পাস আদানপ্রদান থেকে দূরের পোস্টে বল পেয়ে ক্যাব্রাল নিখুঁত ফিনিশে করেন ম্যাচের প্রথম ও একমাত্র গোল। ভিএআর-এ সামান্য অপেক্ষার পর গোলটি নিশ্চিত হয়; ক্যাব্রালের এটি ছিল টুর্নামেন্টের সপ্তম গোল।
আঘাতে নড়বড়ে অস্ট্রিয়া বিরতির আগে একবার চেষ্টা করলেও ওয়াইনহানডলের দূরপাল্লার শট গেল ক্রসবারের ওপর দিয়ে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে তারা দৃঢ়ভাবে ফিরে আসে, বল দখল করে নেয় এবং দীর্ঘ রেঞ্জের শটে রোমারিও কুনিয়াকে ব্যস্ত রাখে দেশিশকু, জোসেপোভিচ, মার্কোভিচ ও মজার। এক পর্যায়ে এনডুকওয়ের হেড ফিরিয়ে দেওয়ার পর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে বদলি নামা ফ্রাউশারের শট পোস্টে লাগে—এটাই ছিল অস্ট্রিয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ।
শেষ পর্যন্ত সেই রক্ষা-লাগা সুযোগই তাদের ধাক্কা দেয়; পর্তুগাল চাপ সামলে ধরে রাখে লিড। শেষ বাঁশি বাজতেই মাঠজুড়ে লাফিয়ে ওঠে তরুণ পর্তুগিজরা—ইউরো শিরোপার পর এবার বিশ্ব মঞ্চে দ্বিতীয় সাফল্য। ফুর্তাদো, কুইন্তাস, কুনিয়া, মিদে ও ক্যাব্রালদের এই দলকে এখনই অনেকেই বলছেন পর্তুগালের ‘নতুন সোনালি প্রজন্ম’।
এদিকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচেও ছিল নাটকীয়তা। দ্রুতই লালকার্ডে ১০ জনে নেমে পড়ে ব্রাজিল। এরপর ঝড়ের মতো বদলি ও গোল বাতিলের দোলাচল। নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য থাকার পর টাইব্রেকারে ২–৪ ব্যবধানে জয় পায় ইতালি। গোলরক্ষক লঙ্গোনির দারুণ দুটি সেভ ও বারালার শেষ শটের দৃঢ়তায় ব্রোঞ্জ জিতে নেয় টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ইতালি।
মন্তব্য করুন