অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে টানা দুই দিনের অভিযানে ১০ ফিলিস্তিনি নিহতের পর সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ইসরায়েল। তবে ফিলিস্তিনে তাদের হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বুধবার গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। জেনিন থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই গাজার সশস্ত্র যোদ্ধারা ইসরায়েল লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ার প্রতিক্রিয়ায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় সেখানে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই মুহূর্তে আমরা অভিযান শেষ করছি। তবে জেনিনে এটাই আমাদের শেষ অভিযান নয়। সেখানে আমাদের কর্মকাণ্ড আরও বিস্তৃত। মঙ্গলবার ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের শহরটির কাছে এক চেকপয়েন্টে তিনি এসব বলেন। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও সিএনএনের।
ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, গাজা থেকে বুধবার রাতে রকেট হামলা চালানো হয়। এর জবাবে সেখানে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এ হামলায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র দল হামাসের একটি গোপন (মাটির নিচে) অস্ত্র তৈরির অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। এ ছাড়া হামাসের রকেটের যন্ত্রাংশ তৈরির অবকাঠামোতেও হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেছে তারা। তবে ইসরায়েলের নতুন বিমান হামলা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি হামাস। ভিডিওতে বুধবার দিনের আলো ফোটার আগে গাজার স্কাইলাইনে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার পর বড় বিস্ফোরণ দেখা যায়।
গাজা থেকে যে পাঁচটি রকেট ছোড়া হয়েছে, তার সবই ঠেকানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। রকেট ছোড়ার পরপরই ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের সেরত এবং আশপাশের শহরে সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। এ রকেট হামলার জন্য হামাসকে দায়ী করা হলেও সশস্ত্র দলটি এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। এসব পাল্টাপাল্টি হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে গত মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর যানগুলো জেনিন ছাড়া শুরু করে। জেনিনের শরণার্থী শিবিরে গত রোববার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে মোট ১২ ফিলিস্তিনি ও এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য। ইসরায়েলি সেনারা যখন জেনিন ছাড়ছেন, তখনো পশ্চিম তীরের উত্তরাংশের এ শহরে একটি হাসপাতালের কাছে বন্দুকযুদ্ধ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, তাদের কয়েকটি দল কাজ করছে পশ্চিম তীরের এমন একটি হাসপাতাল লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। এ বিষয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, হাসপাতালের কাছে তাদের বাহিনীর গুলি ছোড়ার বিষয়ে তারা কিছু জানে না।
মন্তব্য করুন