পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়ছেন তিনি। তাই পৃথিবীর ও পরিবেশের জন্য একটা কিছু করার তাগিদ তো থাকবেই। এদিকে গাছ লাগানোর মৌসুমও এসেছে। ক্যাম্পাসেও শুরু হতে চলেছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। সেই চিন্তা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজিফা আরা করিম নিজের ক্যাম্পাসকে উপহার দিয়েছেন ১২০টি গাছের চারা। লিখেছেন নাজমুল ইসলাম।
চারাগুলোর মধ্যে রয়েছে—কৃষ্ণচূড়া, আমলকী, অর্জুন, হরীতকী, বহেরা, জারুল, কাঠবাদাম, নাগেশ্বরসহ আরও অনেক ফল ও ফুল। এরই মধ্যে চারাগাছগুলো লাগানো শুরু হয়ে গেছে। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে কবি বন্দে আলী মিয়া মুক্তমঞ্চগামী সড়কের পাশে, আনন্দ সরোবরের পাড়ে, কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে, মহুয়া ভবনের সামনে, নির্মাণাধীন একাডেমিক ভবনের সামনে ও আরও অনেক জায়গায় গাছ লাগানো হয়েছে। গাছগুলো পেয়ে যেন উঁচু উঁচু ভবনঘেরা ইট-পাথরের রাজ্য একটু প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
নিজ ক্যাম্পাসকে গাছের চারা উপহার দিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করে নাজিফা বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেশে ২৫ ভাগ বনভূমির প্রয়োজন। কিন্তু গাছ কাটার তুলনায় রোপণ করা হয় কম।
ক্যাম্পাসে সবুজায়ন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে ১৭ প্রজাতির ঔষধি, বনজ ও ফলদ মোট ১২০টি গাছের চারা উপহার দিয়েছি। আমাকে এ কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন বিভাগের শিক্ষক ড. মো. নাজমুল ইসলাম। গাছগুলো আমাদের পারিবারিক নার্সারি থেকে নিয়েছি। এ কাজে আমার বাবাও বেশ সহযোগিতা করেছেন। প্রত্যাশা থাকবে সবাই গাছগুলোর পরিচর্যা করবেন।
এ বিষয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষক ড. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় উপাচার্যের নির্দেশে আমি বিভিন্ন জায়গায় গাছের খোঁজ করতে থাকি। ওই সময় বিভাগের শিক্ষার্থী নাজিফা আরা করিম সাড়া দিয়ে নিজ উদ্যোগেই গাছের চারা উপহার দেয়। তার এ কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক হবে বলে মনে করি।
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী পবিত্র কুমার মাহাতো বলেন, ক্যাম্পাসের অনেক গঠনগত বৈচিত্র্য এসেছে। আগে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা চত্বর ছাড়া শিক্ষার্থীদের আড্ডার জায়গা ছিল না। এখন আনন্দ সরোবরের সিঁড়িতে, জনক জ্যোতির্ময়ের পাদদেশে, শহীদ মিনারের দুপাশে জমে আড্ডা। সম্প্রতি কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ক্যাম্পাসের পরিবেশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই ভারসাম্য ফেরাতে গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। রাফিয়ার দেখাদেখি এখন থেকে সুযোগ পেলে আমিও বৃক্ষরোপণ শুরু করব ভাবছি।
মন্তব্য করুন