আঙ্গুর নাহার মন্টি
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০২:৩৫ এএম
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২৩, ০৭:০৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন

পশ্চিমারা নীরব সংবিধান ও প্রধানমন্ত্রী ইস্যুতে

নির্বাচন কমিশনের লোগো
নির্বাচন কমিশনের লোগো

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাঁচ মাসও বাকি নেই। নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ক্ষমতাসীনরা স্পষ্টই বলছে, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আর নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপি অনড়। অন্যদিকে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারকে তাগিদ দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহল। তারা চায় অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তবে পশ্চিমা কিংবা অন্য কোনো দেশই নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে কিছু বলেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ের সফর, বক্তব্য ও তৎপরতা এবং বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের প্রথমবারের মতো দেওয়া আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কারও বক্তব্যেই নেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গ।

সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সূত্রগুলোও জানিয়েছে, বিদেশি কূটনীতিকরা কোথাও তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকার, সংসদ বিলুপ্তি কিংবা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে কথা বলেনি। এমনকি নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে সবচেয়ে বেশি চাপে রাখা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। তাদের নতুন ভিসা নীতিসহ প্রকাশ্য-নেপথ্য সব আলোচনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে এখন একটাই আলোচনা, আগামী নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়। খোদ সরকারপ্রধানও সুষ্ঠু ভোটের ব্যাপারে বারবার আশ্বস্ত করছেন। ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা কূটনীতিকদের কাছে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার ব্যাপারে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনসহ সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরছেন। দলীয় সরকারের অধীনে ভালো নির্বাচনের উদাহরণ হিসেবে সাম্প্রতিক সিটি নির্বাচনগুলোর কথা বলছেন। ইইউর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেফ ব্যারেল আগামী সেপ্টেম্বরে নির্বাচনের আগে পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেবেন। যুক্তরাষ্ট্রও এরই মধ্যে বলেছে, অক্টোবরে আসছে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল।

এদিকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো মনে করে, নির্বাচন প্রশ্নে তারা যেসব দাবি জানাচ্ছে, তাতে পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আছে। মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণাকে অনেকেই সরকারের প্রতি বিরূপ মনোভাবের ইঙ্গিত মনে করেছিলেন। পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে আন্দোলন চাঙ্গা করার পরিকল্পনাও ছিল তাদের। তবে আন্দোলনের মূল দাবি ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ইস্যুতে বিদেশিদের কোনো আগ্রহ না থাকায় কিছুটা হতাশ তারা। গত শুক্রবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে এই হতাশা ফুটে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ওইদিন তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারত কী বলল, তা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর দরকার নেই।’

অথচ সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে কড়া তাগিদ দিয়ে ঘোষিত নতুন মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা।

এর আগে গত বুধবার ঢাকার ২৫ দেশের দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তার সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে বিএনপি। বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে তাদের একদফা দাবির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়।

একই দিনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠকের পর পিটার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না। কারও পক্ষে কাজও করছে না। তারা বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চান। যেখানে কোনো সংঘাত হবে না। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ভাবছেন না বলেও স্পষ্ট জানান।

এর এক দিন পর গত বৃহস্পতিবার ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারত প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অবস্থান জানায়। ভারতীয় পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যেভাবে চাইবে, ভোট সেভাবেই হবে। সবকিছু তারাই নির্ধারণ করবে। নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর দাবির বিষয়ে ভারতের কোনো মন্তব্য নেই।

ঢাকার পরিস্থিতি দিল্লি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জানিয়ে মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচন ঘিরে ওই দেশে বহু ধরনের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক দুনিয়াও অনেক মন্তব্য করছে। কিন্তু ভারত তো ভারতই। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী বাংলাদেশের ঘটনাবলির প্রভাব ভারতের ওপরও পড়ে। তাই ভারত চায় নির্বাচন পরিকল্পনামাফিক হোক। সহিংসতা ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভোট হোক।

এ প্রসঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ‘আগামী নির্বাচন ঘিরে বিদেশি বন্ধুরা বারবার তিনটি শব্দই বলছে। তা হচ্ছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ। তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায়। তারা মানবাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ নানা বিষয়ে উদ্বেগ দেখালেও কখনো কোনো দলের পক্ষে তাদের একক অবস্থান দেখায়নি। তারা তত্ত্বাবধায়ক বা নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েও কথা বলেনি। কারণ তারা অন্য দেশের সংবিধানের বাইরে কথা বলবে না। এটা নিয়ে বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, ‘ভারত, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করার রেওয়াজ রয়েছে। আমাদের দেশেও তেমনটি হতে পারে। কারণ নির্বাচনের আগে সংসদ বিলুপ্ত না করলে তো আসন শূন্য হবে না। আর আসন শূন্য না হলে নির্বাচন কীভাবে হবে? বিষয়টি এখন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।’

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সংবিধান অনুসারে নির্বাচনের বাইরে যাওয়ার যুক্তি ও সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান বাস্তবতায় সরকারপ্রধানের নেতৃত্বে একটি নির্বাচনকালীন সরকার হতে পারে। যারা কোনো নীতিনির্ধারণ বা আইন প্রণয়ন করবে না। শুধু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে।’

এদিকে র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা, নতুন ভিসা নীতি, কংগ্রেসম্যানদের চিঠি ও জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচনের জন্য লবিংসহ নানা কারণে নির্বাচন ইস্যুতে বিদেশি বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে আওয়ামী লীগ সরকার বেশ অস্বস্তিতে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া, দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, ইইউর বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর ও ইইউর প্রাক-নির্বাচনী পরিস্থিতি মূল্যায়ন দলের সফরের সময়ও বিএনপি ও সমমনারা নানাভাবেই তাদের কাছে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বার্তা দিয়েছে। কিন্তু কোনো সফরেই কোনো বিদেশি প্রতিনিধি এ ব্যাপারে মন্তব্য করেননি। বরং সরকারের সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের অঙ্গীকারকে সমর্থন করে তা বাস্তবায়নের তাগিদ অব্যাহত রেখেছেন। এটিও লক্ষণীয়, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে বিদেশিরা বেশি সরব ও সক্রিয়। সরকারও পরিস্থিতি সামলে স্পষ্টই জানিয়ে দিচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে বিদেশি বন্ধুদের পরামর্শ নেওয়া হলেও চাপ বা হস্তপেক্ষ মেনে নেওয়া হবে না। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচন কেন্দ্র করে এক বিবৃতির কারণে ইইউসহ ১৩ দেশের কূটনীতিকদের চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত, একদফা দাবির সমর্থনে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন কিছুটা হতাশ। এই সুযোগে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করছে ক্ষমতাসীন দল। সম্প্রতি মহাজোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার তিনি গণভবনে তৃণমূল নেতাদের নিয়ে বিশেষ বর্ধিত সভা করেছেন। নির্বাচনী প্রস্তুতি নেওয়ার বার্তা দিয়ে তিনি তৃণমূলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পক্ষে জনসমর্থন জোরদারের নির্দেশনা দিয়েছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গত দেড় দশকে রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়া বিএনপি বিদেশি সমর্থন ছাড়া কতটা মাঠ ধরে রাখতে পারবে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। সেই সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্ব সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় দলটি নির্দেশনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নেও বিভ্রান্তিতে রয়েছে। তাই বিভিন্ন দলকে বিএনপির বিকল্প ভাবতে শুরু করেছে। তবে ক্ষমতাসীনরা আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চায়। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও সংবিধান মেনে যথাসময়েই নির্বাচন হবে, এটাও স্পষ্ট করেছে সরকার।

জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ কালবেলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন কীভাবে হবে—তা এ দেশের জনগণ, ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করবে। এখন আওয়ামী লীগ একদিকে আর সারা দেশের জনগণ আরেক দিকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো বলছে, তারা বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়। এই চারটি জিনিস হতে হলে আওয়ামী লীগকে সরে যেতে হবে। কেবল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেই সেটা সম্ভব।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিদেশিরা সরাসরি কেয়ারটেকার সরকারের কথা বলছে না। কারণ, কেয়ারটেকার ইস্যুটি আমাদের দেশের সাংবিধানিক বিষয়। তাই ডিপ্লোম্যাটিক কারণে তারা এটা নিয়ে কথা বলতে পারে না। যেমন আমরা অন্য কোনো দেশের সংবিধান নিয়ে কথা বলব না। এটি কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু ভিসা পলিসি, স্যাংশন এবং তারা যা যা বলছে, সেটিতে পরোক্ষভাবে এটি বোঝা যায় যে—তারা বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ধারা, গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চায়। সেটি কখনোই সম্ভব হবে না আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে। এই কথাগুলো তারা প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে বলছে। পরোক্ষভাবে তারা কেয়ারটেকারই মিন করছে।’

বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ভারত বহু বছর পরে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটা মন্তব্য করেছে। তারা বলেছে, এ ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। বাংলাদেশের জনগণ তো সিদ্ধান্ত নিয়েই বসে আছে, এই সরকারকে যেতে হবে।’

এদিকে বিএনপিসহ সবার অংশগ্রহণে একটি ভালো নির্বাচনের লক্ষ্যে কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ আরও জোরালো হয়েছে। বড় দুই দলের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে সমঝোতায় পৌঁছতে নেপথ্যে সংলাপের আওয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এ বিষয়ে কালবেলাকে বলেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক দলই নির্বাচনমুখী। বিএনপি হয়তো নানা কারণে কিছু শর্ত আরোপ করছে। তবে সরকারের তো সংবিধানের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতেও দেশি-বিদেশি কোনো চাপ বা উদ্বেগ নেই।’

আগামী নির্বাচন সব দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং ও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘কেউই এবার নির্বাচনের বাইরে থাকতে চাইবে না। আর দলগুলোর নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ চাপও থাকবে। সেই চাপই তাদের সংলাপে বসতে বাধ্য করবে। যদিও সংলাপ যে হচ্ছে না, তা নয়। কূটনীতিকদের দৌড়ঝাঁপ ও বহুমুখী আলোচনার মাধ্যমে সেটি আসলে চলছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনেক নমনীয়। সংবিধান সমুন্নত রেখে সবার প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব। বিএনপি বা অন্য কোনো দল যদি নিজস্ব সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচনে না আসে, সেক্ষেত্রে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তো শুধু ক্ষমতাসীনদের নজরে রাখছে না, সব দলকেই পর্যবেক্ষণ করছে। তাই আশা করছি, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কালীগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

চার্টার্ড সেক্রেটারি : ব্যতিক্রমধর্মী ও সময়োপযোগী এক পেশা 

সিজিএসের সংলাপে বক্তারা / রাজউক দুর্নীতিমুক্ত না হলে ঢাকা বাঁচবে না

যাদের নিয়ে উমামার প্যানেল ঘোষণা

বিয়ের পর স্বাস্থ্য ও ভুঁড়ি বাড়ে কেন? যা বলছেন পুষ্টিবিদ

বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস সিরিজে ম্যাচ অফিসিয়াল হিসেবে থাকছেন যারা

ছাগল হত্যার অভিযোগে যুবক কারাগারে

ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রকল্পে বিশাল নিয়োগ, ৮ম শ্রেণি পাসেও আবেদন

ড. সরোয়ার ও আসিফ মাহতাবকে হত্যার হুমকি ইস্যুতে হেফাজতের বিবৃতি 

গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের হুমকি, গ্রাহকদের যে বার্তা দিল তিতাস

১০

পাকিস্তানি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পেলেন বাংলাদেশি চিকিৎসক

১১

আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র বানিয়েছে ইরান

১২

রহস্যময় ছবির পাশে লেখা ‘আম্মু-আব্বু আমারে মাফ করে দিও’

১৩

এবার এনবিআরের ৩ কর্মকর্তাকে বদলি

১৪

পানি উঠেছে অমিতাভ বচ্চনের বাংলোতে 

১৫

মেসের কক্ষই যেন ‘মিনি সেটেলমেন্ট অফিস’, বিছানার নিচে হাজারো খতিয়ান

১৬

ভারতে নতুন নিয়মে পদ হারাবেন প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী, আসছে বিল

১৭

বিরোধিতার গন্ধ পেলেই মিলবে না মার্কিন ভিসা

১৮

ডাকসু নির্বাচনে বাগছাসের প্যানেল ঘোষণা

১৯

হঠাৎ জ্বর? সেরে উঠতে যা করবেন

২০
X