আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আঞ্চলিক রাজনীতির বিষয়ে এই ভূখণ্ডে ভারত ও আমেরিকার অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। তাই ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে নিজেদের স্বার্থে বলেছে। অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে তারা একে অন্যকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন। এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয়।
গতকাল শনিবার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা উপকমিটির ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। পরে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আমেরিকার দিকে তাকিয়ে আছে। কখন নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নীতি দেবে এর আশায়। তাকাতে তাকাতে চোখের পাওয়ার কমে গেছে। এখন আর কিছু দেখতে পায় না। আর আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের দিকে তাকিয়ে আছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। ’৭৫-এ আমরা ক্ষমতা হারিয়েছি, তখন তো ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়নি। ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতা থেকে চলে গেছি। সেখানেও ষড়যন্ত্রের বিষয় তো আছেই। নির্বাচনের ব্যাপারে ভারত বা কোনো বিদেশি শক্তি কাকে ক্ষমতায় বসাবে? ক্ষমতাচ্যুত করবে? যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, তাদের এমন মন্তব্য করা অশোভন। তিনি বলেন, যারা ভারতের হস্তক্ষেপ বলেন; তাহলে একাত্তর সালে কী হয়েছিল? ভারত আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল, তাদের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছে। আমাদের লোকজনকে আশ্রয় দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, ট্রেনিং দিয়েছে, সেটি কি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ নয়? সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারতের ভূখণ্ডে গিয়ে জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, সেটি কার হস্তক্ষেপ?
ডেঙ্গু, বিদেশি হুমকি ও বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এখন চারদিক থেকেই বিপদ, নানা রকম বিপদ। ডেঙ্গু থেকে সাবধান, ডেঙ্গুর মতো ভয়ংকর বিএনপি থেকে সাবধান। আজ দেশের প্রধান দুই শত্রু—এক শত্রু বিএনপি, আরেক শত্রু ডেঙ্গু। আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে এই শত্রুর প্রতিরোধ করি। মানুষের জীবন মশার হাতে নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদ বিএনপির হাতে নিরাপদ নয়। ডেঙ্গুর চেয়েও ভয়ংকর বিএনপিকে আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য উপকমিটির সদস্য প্রাণ গোপাল দত্তের সভাপতিত্বে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি জামাল উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠানটির মিলন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপির যতটা উদ্বেগ, তার চেয়ে বেশি নোংরা রাজনীতি করছে। খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে দলটির আইনজীবীরাও দীর্ঘসূত্রতা করেছে। তাকে মরার আগেই কয়েকবার মেরে ফেলছে মির্জা ফখরুলরা।
মন্তব্য করুন