বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলন সঠিক পথে রয়েছে বলে মনে করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে দলের নেতাদের তিনি বলেছেন, ঠিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারলে সরকার দাবি মানতে বাধ্য হবে। ঈদুল আজহার দিন গত বৃহস্পতিবার রাতে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এ নির্দেশনা দেন তিনি। খালেদা জিয়া বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনসম্পৃক্ত আন্দোলনে এ সরকারকে বিদায় করতে পারলে সেটাই হবে বড় অর্জন। এ জন্য আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যান। শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসা ফিরোজায় যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির ছয় সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান। রাত ১০টার দিকে তারা বেরিয়ে আসেন। গেটের সামনে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ঈদ উপলক্ষে এটি একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। সাক্ষাতে কোনো রাজনৈতিক আলাপ হয়নি। আমরা উনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি, উনি কেমন আছেন জানতে চেয়েছি। উনিও আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন আমাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা ও লিভারের রোগে ভুগছেন। ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসা নিয়ে গত ১৭ জুন বাসায় ফেরেন তিনি। তার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, শারীরিকভাবে উনার উন্নতি হয়েছে—এটা বলা যায় না। আমরা আজকে উনাকে যতটুকু দেখেছি, উনার চিকিৎসা বাইরে (বিদেশে) অ্যাডভান্স সেন্টারে একান্তভাবে প্রয়োজন। উনার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা যেভাবে অ্যাডভাইস করেছেন।
ফিরোজায় ঈদ উদযাপন খালেদা জিয়ার : নিকটাত্মীয়দের নিয়ে ‘ফিরোজা’য় ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন খালেদা জিয়া। ঈদের দিন দুপুরে বোন-ভাইসহ নিকটাত্মীয়রা তার বাসায় যান। তারা খালেদা জিয়ার জন্য বাসায় রান্না করা খাবার নিয়ে যান। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষে খালেদা জিয়ার বাসায়ও বিশেষ খাবার রান্না করা হয়। দুপুরে তারা ফিরোজায় একসঙ্গে খাবার খান।
ঈদের দিন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে একটি গরু ও একটি ছাগল কোরবানি দেওয়া হয়। পরে কোরবানির মাংস রাজধানীর বিভিন্ন এতিমখানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার এসব তথ্য জানিয়েছেন। এ ছাড়া খালেদা জিয়া ঈদের দিন লন্ডনে থাকা তার বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার পরিবারের সদস্য এবং ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ফোনে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এদিকে ঈদের দিন সকাল সাড়ে ১১টায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়াপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ অন্য নেতারা শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং দোয়া করেন।
এ ছাড়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তাদের ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোসহ ২৮ নেতাকর্মীর পক্ষে চারটি গরু কোরবানি দেওয়া হয়। এ নেতাকর্মীদের অনেকেই গুম ও খুনের শিকার। ঈদের দিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদোগে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই কোরবানি দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন