হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি নিজের কাছে রেখে দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিধিবহির্ভূতভাবে সরকারি গোপনীয় নথি নিজের কাছে রেখে দেওয়াসহ ট্রাম্প (৭৬) সাতটি অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছেন। তবে এসব অভিযোগের বিষয় এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে দ্বিতীয় মামলায় অভিযুক্ত হলেন ট্রাম্প। আর এটি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টের এ ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার প্রথম ঘটনা। এদিকে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বৃহস্পতিবার তিনি এ দাবি করেন। খবর বিবিসি ও সিএনএনের।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দায়ের করা এই ফৌজদারি মামলাটি আগামী বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নামা ট্রাম্পের জন্য আরেকটি আইনি ধাক্কা। তিনি ইতোমধ্যে নিউইয়র্কে আরেকটি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আছেন, যার বিচার আগামী মার্চে শুরু হওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার বিকেলে মিয়ামির ফেডারেল আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাকে তলব করা হয়েছে। সেখানে তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের শুনানি হতে পারে। এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি যুক্তরাষ্ট্রের একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের ক্ষেত্রে
এ ধরনের কিছু হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এটি একটি অন্ধকার দিন। আমাদের দেশ গুরুতর ও দ্রুত পতনের মধ্যে আছে; কিন্তু আমরা সবাই মিলে আমেরিকাকে আবার মহান করে তুলব!’ ট্রাম্পের আইনজীবী জিম ট্রাস্টি সিএনএনকে জানিয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট একটি সমন পেয়েছেন, তাতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর বিবরণ আছে।
এসব অভিযোগের মধ্যে ষড়যন্ত্র, মিথ্যা বিবৃতি, বিচারে বাধা এবং গুপ্তচরবৃত্তি আইনের অধীনে অবৈধভাবে গোপনীয় নথি ধরে রাখা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে অভিযোগের মূল নথিটি এখনো সিল করা অবস্থায় আছে। এতে কী বলা হয়েছে, তা ট্রাম্প নিজেও এখন পর্যন্ত দেখেননি। এতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর বিস্তারিত বিবরণ আছে। ট্রাম্পকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য যে সমন পাঠানো হয়েছে, তাতে তার বিরুদ্ধে আনা সাতটি অভিযোগের বিষয়ে তার আইনি টিমকে অবহিত করা হয়েছে বলে একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিওজে) এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি এবং ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রকাশ করাও হয়নি।
উল্লেখ্য, গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাসভবন মার-আ-লাগোতে অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে সেখান থেকে ১১ হাজার রাষ্ট্রীয় নথি জব্দ করে দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ। জব্দ হওয়া এসব নথির প্রায় ১০০টি ছিল ‘গোপনীয়’। এর মধ্যে কিছু ‘অতি গোপনীয়’ নথিও ছিল।
মন্তব্য করুন