কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৪৬ এএম
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৯ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা

মিল্টন সমাদ্দার | ছবি : ফেসবুক থেকে নেওয়া
মিল্টন সমাদ্দার | ছবি : ফেসবুক থেকে নেওয়া

মিল্টন সমাদ্দারের জন্ম ১৯৮৪ সালে বরিশালের উজিরপুরের গুটিয়া ইউনিয়নের বৈরকাঠী গ্রামে। মিল্টন তার বাবা জন সমাদ্দারের দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া মিল্টন তিনবেলা ঠিকমতো খাবার পেতেন না। জীবিকার জন্য মানুষের জমিতে কাজ করতেন।

ছোটবেলা থেকেই তার ছিল অর্থের মোহ। বিয়ে, ব্যবসা এমনকি ধর্মকেও তিনি ব্যবহার করেছেন নিজের লাভের জন্য। বাল্যকালের বন্ধু, শিক্ষক, প্রতিবেশী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে নানা প্রতারণার তথ্য। কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে মিল্টন সমাদ্দার অনেক অভিযোগ স্বীকারও করেছেন।

জানা গেছে, ছোটবেলায় ছবি আঁকায় পারদর্শী ছিলেন মিল্টন। বরিশালে জেলা পর্যায়ে ছবি এঁকে পুরস্কারও জিতেছেন। স্কুলের শিক্ষক ‘হামিদ স্যার’ তাকে ছবি আকার সরঞ্জাম কিনে দিতেন। তবে টাকা না দিলে স্কুলের পক্ষে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন না মিল্টন। প্রতিবার পুরস্কার পেলে স্কুলের পক্ষ থেকে তাকে ৫০ টাকা দিতে হতো।

তবে পড়াশোনায় ভালো ছিলেন না কখনো। ছোটবেলা থেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন নানা প্রতারণার। প্রথমবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে গণিতে ফেল করেন। এরপর ২০০১ সালে ফের পরীক্ষা দিয়ে পাস করেন।

ওই বছরই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পিতা জন সমাদ্দারকে পিটিয়ে আহত করেন। এরপর বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। একটি ওষুধ কোম্পানিতে আড়াই হাজার টাকা বেতনে চাকরি পান মিল্টন। কিছুদিনের মধ্যেই ফার্মেসি কর্মকর্তা এবং হাসপাতালের নার্সদের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। এরপর শুরু করেন চুরি।

ওই কোম্পানির চেয়ারম্যানের স্ত্রীর সঙ্গে সখ্য গড়ে রাতারাতি পদোন্নতি বাড়িয়ে নেন এসএসসি পাস মিল্টন। আড়াই হাজার টাকা থেকে তার বেতন বেড়ে দাঁড়ায় ১২ হাজার। তখন নিজেকে তিনি সরকারি বাঙলা কলেজের স্নাতকের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিতেন।

সে সময় কোম্পানিতে প্রভাব খাটিয়ে নিজের বাসায় ওষুধ মজুত করা শুরু করেন মিল্টন। দাম বাড়লে সেসব ওষুধ বাজারে বিক্রি করতেন। একসময় ওষুধ চুরির বিষয়টি ধরা পড়লে চাকরি হারান। ততদিনে বেশ কিছু টাকা জমিয়ে ফেলেছেন। সেই টাকা দিয়ে ২০০৪ সালে চন্দ্রকোনা খ্রিষ্টান মিশন স্কুলে নার্সিংয়ে ভর্তি হন। অসদাচরণের জন্য সেখান থেকেও এক বছরের জন্য বহিষ্কার হন। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালের এক নার্সের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন। একপর্যায়ে তাকে বিয়ে করেন। শেষ পর্যন্ত ২০০৯ সালে নার্সিং পাস করেন।

পরে মিল্টন সমাদ্দার মনোয়ারা হাসপাতালে নার্সিংয়ের চাকরি নেন। কিছুদিন পরে চলে যান আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে। এভাবে ২০১২ সাল পর্যন্ত সেখানে চাকরি করেন। সে সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকাও হাতিয়ে নেন। পরে চাকরি ছেড়ে তৈরি করেন ‘মিল্টন হোম কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১৪ সালে অনলাইনে ব্যবসা জমানোর চেষ্টা করেন। তবে সফল হননি।

এরপর সেই ফেসবুক পেইজের নাম বদলে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ করেন। সেই থেকেই রাস্তা থেকে অসহায় মানুষদের তুলে এনে আশ্রমে তুলছেন। আর তাদের নিয়ে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে প্রচার করে অর্থ সংগ্রহ করছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বুয়েট শিক্ষার্থী রিমান্ড শেষে কারাগারে 

স্পেন দল থেকে বাদ পড়লেন ইয়ামাল

না খেয়ে কত দিন বেঁচে থাকা সম্ভব? যা বলছেন বিজ্ঞানীরা

১৩ নভেম্বর আ.লীগের কর্মসূচি নিয়ে সোহেল তাজের স্ট্যাটাস

পুলিশের দাবি  / ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি সফলে ‘বোম ফারুককে’ টাকা দেন নিক্সন চৌধুরী

মুখ ফসকে ‘শেখ’ বলার ব্যাখ্যা দিলেন স্নিগ্ধ

বুধবার ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখবে এই ৫ পানীয়

পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলা, অভিযোগ ভারতের বিরুদ্ধে

ড্যাফোডিলে পর্তুগিজ রাজবংশের আগমন ও লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ চুক্তি 

১০

ডেঙ্গুতে একদিনে আরও তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯১২

১১

আমরা শান্তির রাজনীতি করতে চাই : মির্জা ফখরুল

১২

গোবিন্দই আমাকে প্রথম হিরো হতে বলেছিলেন : অক্ষয় কুমার

১৩

যানবাহন ভাড়া দেওয়ার আগে যাচাই করুন : ডিএমপি কমিশনার

১৪

বিইউবিটিতে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্মশালা ‘গ্রিটকোয়েস্ট’র উদ্বোধন

১৫

রাতে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রা করবেন, জানালেন সোহেল তাজ

১৬

চার প্রতিবন্ধীকে নিয়ে স্বামীহারা জাহানারার জীবনসংগ্রাম

১৭

গাজায় ‘নো ওয়ার-নো পিস’ মডেলে এগোচ্ছে ইসরায়েল

১৮

ঘরের ভেতর তৈরি করা ‘বিশেষ’ সুড়ঙ্গে লুকিয়ে থাকতেন যুবলীগ নেতা

১৯

অবৈধ স্থাপনা নিয়ে ডিসি সারওয়ারের হুঁশিয়ারি

২০
X