বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ২৩ আশ্বিন ১৪৩২
মো. হুমায়ুন কবীর
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৩ এএম
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ব্যাংক খাতে সংস্কার উপেক্ষিত অগ্রাধিকার

ব্যাংক খাতে সংস্কার উপেক্ষিত অগ্রাধিকার

(পূর্বে প্রকাশের পর)

লুণ্ঠনকারীদের লুণ্ঠন শুধু অর্থ আত্মসাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বৈষম্যমূলকভাবে ন্যূনতম যোগ্যতা ছাড়া নিজ এলাকা বা জেলার প্রয়োজনাতিরিক্ত বিপুলসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন, যা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যাংকের মোট লোকবলের ৫০ শতাংশেরও অধিক। ব্যাংকের এটিএম বুথ স্থাপন, উপশাখা, শাখা, প্রধান কার্যালয়সহ যেসব ভবন প্রয়োজনে ভাড়া করেছেন বা নিজেদের ভবন ভাড়া দিয়েছেন, তাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা গ্রহণের কারণে বাজার দরের দ্বিগুণ-তিনগুণের অধিক। ইন্টারনাল ডেকোরেশন, সব ধরনের কেনাকাটা, লাগামহীন যথেচ্ছ অনৈতিক ব্যয়, ক্ষমতাবানদের আনুকূল্যের জন্য অকাতরে অর্থদান, অপ্রয়োজনীয় ভূতুড়ে বিজ্ঞাপনের খরচসহ ব্যাংক দোহনের জন্য আরও কত পথ যে তারা বের করেছেন, তার ইয়ত্তা নেই। আমানত ফেরত দেওয়ার বর্ধিষ্ণু চাপের বাইরে এখন প্রতি মাসের ভবন ভাড়া ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ এসব ব্যাংকের জন্য গোদের উপর বিষফোড়ার রূপ নিয়েছে।

অনেকেই এরই মধ্যে বলতে শুরু করেছেন, পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদও কিছু করতে পারছে না। সত্যি বলতে রাষ্ট্রীয় সহায়তায় লুটকৃত হাজার হাজার কোটি টাকা ফেরত আনার/পুনরুদ্ধারের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পুনর্গঠিত পর্ষদ কর্তৃক এসব ব্যাংকের ব্যাপারে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার সুযোগ সীমিত। এসব ব্যাংক আইসিইউতে থাকা রোগীর ন্যায় জীবনমরণ সন্ধিক্ষণে আছে। এদের অবস্থা সর্বাঙ্গে ব্যথা মলম দেব কোথায়। বর্তমানে শুধু ছোটখাটো গ্রাহকদের কাছ থেকে কিস্তি আদায়, পুনঃতপশিল, ব্যয় নিয়ন্ত্রণ, কৃচ্ছ্রসাধন, রেমিট্যান্স আকৃষ্টকরণ, উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ ছাড়া পর্ষদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার সুযোগ খুবই সীমিত। কারণ, বৃহৎ লুণ্ঠনকারীদের কাছ থেকে অর্থ উদ্ধারে শুধু সরকারই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে সক্ষম।

বিদ্যমান এ অবস্থায় মালিকরূপী ব্যাংক ডাকাত এবং ঋণের নামে লুণ্ঠিত অর্থ আদায়ের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিম্নোক্ত কঠোর ব্যবস্থাদি গ্রহণ অতীব জরুরি মর্মে প্রতীয়মান হয়। প্রথমত নামে, বেনামে, ভুয়া নামে ৫০ কোটি বা তদূর্ধ্ব পরিমাণ ঋণগ্রহণকারীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, মিল-ফ্যাক্টরি, কলকারখানা, প্লট, ফ্ল্যাট, জায়গা, জমি, ঘরবাড়ি, বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লঞ্চ, ট্রলার, কার্গো, ফিশিং বোট, হেলিকপ্টার, এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, বাড়িঘর, মূল্যবান সম্পদ, বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কেট, রিসোর্ট ইত্যাদির মালিকানা, নামে-বেনামে/আত্মীয়পরিজনের নামে থাকা ব্যাংক স্থিতি, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জরুরিভাবে চিহ্নিত করা। এসব সম্পদকে অ্যাটাচমেন্ট করা, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার এবং নিলামে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি বা সরকারি-আধাসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহার করার জন্য সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প আছে বলে মনে হয় না। প্রচলিত ব্যাংক কোম্পানি আইন, অর্থ ঋণ আদালত আইন, নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট, চুক্তি আইন, পিডিআর অ্যাক্ট, ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশনস অ্যাক্ট, অ্যান্টি মানি লন্ডারিং আইন—কোনোটিই ব্যাপক এ লুটপাটের যথাযথ প্রতি বিধানের জন্য যথেষ্ট নয়।

তাই দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ আইনজ্ঞ প্যানেলের তত্ত্বাবধানে লুটেরাদের বন্ধককৃত এবং বন্ধকবিহীন উপরোক্ত সম্পদাদি রাষ্ট্রের আয়ত্তে আনার আইনি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কঠিন ও কঠোর ধারার বিধান সংবলিত অর্ডিন্যান্স যত দ্রুত সম্ভব জারি করা একান্ত প্রয়োজন। এ ছাড়া অন্য আইনে যাই থাকুক না কেন, এ অর্ডিন্যান্সের বিধানকে সব আইনের ওপর স্থান দিতে হবে। এরই মধ্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে আর কালক্ষেপণের মোটেও সুযোগ নেই। এ ছাড়া সন্দেহভাজন সুবিধাভোগী, লুণ্ঠনকারীদের অভিজাত এলাকায় অবস্থিত সব জায়গাজমি, ফ্ল্যাট, প্লট ও অন্যান্য সম্পদ হস্তান্তরে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন। কেননা এরই মধ্যে বিতর্কিতরা তাদের অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ-সম্পত্তি হস্তান্তরের কাজ শুরু করেছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। নিরপরাধ সাধারণ মানুষের ভোগান্তি/সমাজে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া লাঘবের জন্য এরূপ ব্যক্তিবর্গ বা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি তালিকা প্রস্তুত ও প্রচার করে শুধু তাদের ওপরই বর্ণিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যেতে পারে। প্রতীয়মান হয়, তাদের সংখ্যা খুব বেশি হবে না। এরই মধ্যে তাদের অনেকের পরিচয় জাতির কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে। এসব অপরাধী চাতুরী করে বা চাপ প্রয়োগ করে ম্যানেজমেন্টকে যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহার করার মাধ্যমে তাদের অনেক মূল্যবান সম্পত্তি ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখেনি। যা কিছু রেখেছে সেখানেও অনেক কাগজপত্রই জাল ও ভুয়া, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মতো উপযুক্ত প্রমাণক দলিল-দস্তাবেজের অভাব, মালিকানায় গড়বড় ও বিভ্রান্তি, অতি মূল্যায়িত এবং ইচ্ছাকৃত ভুল তথ্য সংবলিত। আইনি মারপ্যাঁচে যেন তারা বেরিয়ে যেতে পারে, সেজন্য সুকৌশলে এরূপ প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এজন্য সতর্কতার সঙ্গে যতদূর সম্ভব নিশ্ছিদ্রভাবে এরূপ অপরাধীদের বন্ধককৃত ও বন্ধছাড়া সব সম্পদ জব্দ এবং আইনের আওতায় আনার জন্য অর্ডিন্যান্সটি প্রণয়ন ও কার্যকর করতে হবে। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের অনুরূপ ব্যাংকঋণ পুনরুদ্ধার বা উপযুক্ত অন্য কোনো নামে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের ব্যবস্থা করা/দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে একাধিক বেঞ্চ গঠনসহ স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এসব ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলা নিষ্পত্তির বিধান রাখার বিষয়টি সংগত কারণেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনার দাবি রাখে।

অর্ডিন্যান্সে তাদের প্রত্যক্ষ/পরোক্ষ সহায়তাকারী, উপকারভোগী, রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত, সরকারি-বেসরকারি ব্যক্তি, কর্মকর্তা ও দায়ী ব্যাংকারদের সম্পত্তিও জব্দ এবং ক্রোকের আওতায় আনার বিধান রাখতে হবে। লুণ্ঠনের সহযোগী অনেক এমডি-ব্যাংকারও হালুয়া-রুটির ভাগ পেয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে জনশ্রুতি আছে। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রিট করার অধিকার না দেওয়ার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা দরকার। রিট দায়ের ও মামলা নিষ্পত্তি বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখার বিষয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। তবে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের স্বার্থে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের বিধান রাখা যেতে পারে। আইনজ্ঞরা এ ব্যাপারে যথাযথ দিকনির্দেশনা বা পরামর্শ দিতে পারেন। তবে ট্রাইব্যুনাল তাদের রায়ে যদি কোনো নির্দিষ্ট অর্থ ফেরত দেওয়া এবং কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার রায় প্রদান করেন, তবে সংক্ষুব্ধ পক্ষ আপিলের আগে রায়কৃত অর্থ অথবা সম্পদ মূল্যের অর্ধেক পরিমাণ অর্থ আদালতের অনুকূলে জমা রাখার বিধান রাখা প্রয়োজন, যা পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বিজয়ীপক্ষের অনুকূলে ছাড় করা যেতে পারে।

মামলার গ্যাঁড়াকলে কালক্ষেপণ, বিলম্বিত বিচার, অবিচারের নামান্তর প্রবচনকে যেন সত্যে পরিণত না করতে পারে, সেদিকে সজাগ থাকা দরকার। নিলামের মাধ্যমে সরকার বা অন্য কোনো সংস্থা এসব সম্পত্তির মালিকানা নিজেদের প্রয়োজনে গ্রহণ করলে উপযুক্ত মূল্য ব্যাংকগুলোকে ঋণের আনুপাতিক হারে পরিশোধ এবং নিলামে বিক্রিত সম্পদের বিপরীতে প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকের ঋণ পুনরুদ্ধার খাতে সমন্বয় করা হলে, আমানতকারীদের দাবির একটা উল্লেখযোগ্য অংশ ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে।

ব্যাংকের অর্থ লুণ্ঠনকারীরা লুণ্ঠনকৃত অর্থের সিংহভাগই দেশের বাইরে পাচার করেছেন। তারা অনেকেই উন্নত দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। সবচেয়ে বড় যে ঋণখেলাপি একাধিক ব্যাংকের মালিক, তিনি তো এ দেশের নাগরিকত্ব বর্জন করে পিআর গ্রহণের মাধ্যমে এ কুসীদ, বীভৎস, ঘৃণ্য, অপরিমেয় লুটের কাজে জড়িত হয়েছিলেন বলে জানা যায়। ব্যাংক লুণ্ঠনকারী এসব মহাঅপরাধী ডাকাত দেশদ্রোহী, স্বাধীনতার চেতনার ঘোর পরিপন্থি। তারা যুদ্ধাপরাধীদের চেয়েও বড় অপরাধী। তাদের কারণে আজ লাখ লাখ পরিবার কষ্টার্জিত সঞ্চয়-সম্পদ হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। হাজার হাজার মানুষ চাকরি-ব্যবসা হারিয়ে জীবিকা অর্জনের অনিশ্চয়তায় দিশেহারা। প্রতিনিয়ত আমানতকারীদের ক্ষোভ, দ্বারে দ্বারে ধরনা এবং গগনবিদারী আহাজারি দেশের বাতাসকে ভারী করে তুলেছে। তাদের অনুকম্পা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।

গুরুত্বের বিবেচনায় তাদের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। শেকসপিয়ারের ভাষায় ‘We should be cruel only to be kind’। তাদের বিরুদ্ধে কঠিন, কঠোর, নির্মম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এজন্য প্রয়োজন যে, ভবিষ্যতে অনুরূপ অপরাধে লিপ্ত হওয়ার দুঃসাহসও যেন কেউ না করে। লাখো মানুষের আমানত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা—এরূপ ব্যক্তিদের শতবার মৃত্যুদণ্ড দিলেও তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত হবে কি না সন্দেহ। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, আমাদের দুদক ৭১টি দেশে অর্থ পাচারকারীদের সম্পত্তি চিহ্নিত করার অনুরোধ জানিয়ে পত্র প্রেরণ করেছে অথচ হাতের মুঠোয় থাকা তাদের এ দেশীয় সম্পদ সম্পর্কে কেউ কিছু করছে না দেখে অনেকেই হতবাক। এসব দুষ্কৃতকারীর নাগরিকত্ব/পিআর বাতিল করে তাদের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে ভবিষ্যৎ অনুরূপ অপরাধের কবর রচনা করতে হবে।

দুর্ভাগ্যক্রমে এ অপরাধীরা একের পর এক বিশাল আর্থিক কেলেঙ্কারি করেও পার পেয়ে গেছে। তাদের টিকির নাগাল কেউ ধরতে পারেনি বা ধরতে চায়নি। ধরার দায়িত্ব ছিল যাদের, তারা নির্লজ্জভাবে তাদের সহযোগিতা করেছে। অসংখ্য উদাহরণের মধ্যে ৬৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট ছেপে বিধিবহির্ভূতভাবে তাদের সাহায্য করা অন্যতম। তারা একাধিক দেশে লুটের টাকায় ক্রীত বাড়িতে বিত্তবৈভবে বিলাসী জীবনযাপন করছে। তারা তো এ দেশের নাগরিকই থাকতে চায়নি, সেকেন্ড হোম, বেগমপাড়াকে তারা আয়েশি আবাস হিসেবে বেছে নিয়েছে। একদিকে সর্বস্ব হারানো লাখো মানুষ ব্যাংকের কাউন্টারে, রাস্তাঘাটে, ঘরে-বাইরে টাকার শোকে বুক চাপড়াবে; অন্যদিকে দেশে অভিজাত এলাকায় তারা প্লট, ফ্ল্যাট, বাড়ি, গাড়ি, সুরক্ষিত প্রাসাদ, আধুনিক নির্মাণশৈলীতে নির্মিত ডুপ্লেক্স-ট্রিপ্লেক্স বাড়িতে অলি-ওয়ারিশসহ পুরুষানুক্রমে আরামে ভোগ দখল করবে—এটা ন্যায় ন্যায্যতার কোনো মানদণ্ডেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ব্যাংক খাতে কিছু অনিয়ম আগেও হয়েছে কিন্তু মহাবিপর্যয়ের সূচনা করেছিলেন রিজার্ভ চুরির দায়ে গভর্নরের পদ থেকে বরখাস্তকৃত ব্যক্তি। এ পদে অধিষ্ঠিত পরের দুজন মহোৎসবে সেই পালে বাতাস দিয়েছেন। আমাদের চরম দুর্ভাগ্য যে, তিনি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক। অপরাধের অনন্য নজির স্থাপনকারী বেনজীর ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রিধারী, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের খণ্ডকালীন অধ্যাপক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এরূপ অনেক দলদাস, জ্ঞানপাপী, স্বার্থান্বেষী, অর্থ ও ক্ষমতালিপ্সু এখন ঘাপটি মেরে শীতনিদ্রা (হাইবারনেশন) উপভোগ করছেন। বিবেকবিবর্জিত চাটুকারিতায় বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি-ভিসি ইত্যাদি উচ্চতর পদ বাগিয়ে পাহাড়সম দুর্নীতি করে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন এমনকি বাসার কাজের বুয়াকেও বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিয়েছেন। তাদের অনেকে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে পরবর্তী ছোবল মারার সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় দিন গুনছেন। তাদের উচ্ছেদ দেখার জন্য আমাদের আর কত প্রহর গুনতে হবে? ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত প্রথম স্বাধীনতা এবং জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সর্বোচ্চ ত্যাগে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতার বাংলাদেশে তাদের যথোপযুক্ত, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদানের বিষয়টি হোক একটি অন্যতম জাতীয় অগ্রাধিকার।

লেখক: বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ও এসপিসিবিএলের (টাঁকশাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারেক রহমানের সাক্ষাৎকারে ভুল উদ্ধৃতি সংশোধনের আহ্বান টিআইবির

‘আবরারের স্মৃতিস্তম্ভ নিয়ে অনেকের গাত্রদাহ দেখেছি’

সৌন্দর্যবর্ধনে সাভার উপজেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগ

ছেলের দায়ের করা মামলায় বাবাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে কোরআন অবমাননা, সিএমপির জরুরি সতর্কবার্তা

জাতীয়করণ নিয়ে বেসরকারি শিক্ষকদের প্রতি তারেক রহমানের বার্তা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

খেলা শেষ হতেই রেফারির ওপর হামলা

জোর করে পদত্যাগ করানো শিক্ষকদের জন্য সুখবর

আদালতের ‘ন্যায়কুঞ্জে’ খাবার হোটেল, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে উচ্ছেদ

১০

অ্যানথ্রাক্স ছড়াচ্ছে উত্তরাঞ্চলে, রংপুর-গাইবান্ধায় সরেজমিনে তদন্ত শুরু

১১

চীন থেকে যুদ্ধবিমান কেনা প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা / জানলে যে সব বলে দিতে হবে সেটা তো না

১২

শেখ হাসিনা ও কামালের নির্বাচনী যোগ্যতা নিয়ে যা জানা গেল

১৩

ছাত্রদলকে সমর্থন জানিয়ে চাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী

১৪

খুন করে আল্লাহর ভয়ে নামাজ পড়ে ক্ষমা চান হত্যাকারীরা

১৫

ইংলিশদের বিপক্ষে মারুফাদের লড়াই করে হার

১৬

পিআর নিয়ে আমরা শেষ পর্যন্ত লড়ব : চরমোনাই পীর

১৭

ফুটবলকে বিদায় বললেন মেসির আরও এক সতীর্থ

১৮

প্রথমবারের মতো ইউনেস্কোর সভাপতি বাংলাদেশ

১৯

ভারতীয়দের জন্য সংকুচিত হচ্ছে মার্কিন দরজা

২০
X