

আশুলিয়ার বাইপাইলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। নরসিংদীর মাধবদীতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই এ কম্পন রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র।
শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডে রেকর্ড হওয়া এই কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৩।
তবে গাজীপুর আশুলিয়ার বাইপাইলে ভূমিকম্প শুক্রবার হওয়া কম্পনের আফটারশক বলে জানিয়েছেন ভূমিকম্প গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবায়েত কবির।
তিনি বলেন, আশুলিয়ায় অনভূত ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর পলাশে। এটি গতকালের মাধবদীতে অনুভূত হওয়া কম্পনের আফটারশক। তিনি আরও বলেন, আফটারশক ১০-২০ কিলো দূরেও হতে পারে। সেক্ষেত্রে গতকালের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছেই হয়েছে এটি।
সামনে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে রুবায়েত কবির বলেন, ‘গত ১০০ বছরে ঢাকায় এমন ভূমিকম্প হয়নি। যেটি গতকাল হয়েছে। আমরা বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি।’ এর আগে, শুক্রবার সকালে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। শক্তিশালী ওই কম্পনে দুই শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। নিহতদের মধ্যে ঢাকায় চারজন, নরসিংদীতে পাঁচজন এবং নারায়ণগঞ্জে একজন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ।
এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এতে ঢাকায় চারজনসহ সারা দেশে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। গতকাল শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। এটি বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেই অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর থেকে চারদিকে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অনেকের ধারণা এরপর হতে পারে এমন ভূমিকম্প। এ ধারণা ভূমিকম্পের ঝুঁকি বিবেচনায় সমগ্র বাংলাদেশকে মোট ৩টি জোনে ভাগ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর মধ্যে উচ্চ ঝুঁকির আওতাভুক্ত অঞ্চলকে জোন-১, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা জোন-২ এবং জোন-৩-এর এলাকা নিম্ন ঝুঁকিপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত। এক মানচিত্রে দেশের ভূমিকম্প ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রকাশিত মানচিত্রে দেখা যায়, দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি এলাকা জোন-১-এর আওতায় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ হিসাবে চিহ্নিত। ফল্ট লাইন বা প্লেট বাউন্ডারির কাছাকাছি অঞ্চলগুলো ভূমিকম্পের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। বিশেষ করে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ৯টি জেলা, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নরসিংদীর কিছু অংশ, পুরো কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির নানা এলাকা উচ্চঝুঁকিপ্রবণ হিসেবে বিবেচিত। অন্যদিকে জোন–৩ এলাকাভুক্ত খুলনা, যশোর, বরিশাল ও পটুয়াখালীতে ভূমিকম্পের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে কম।
মন্তব্য করুন