

অ্যানফিল্ডে এমন নীরবতা শেষ কবে নেমে এসেছিল—তা মনে করতে কষ্ট হবে লিভারপুল সমর্থকদের। বর্তমান প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন দলটি যেন ভেঙে পড়েছে, ছিন্নভিন্ন আত্মবিশ্বাস, দিশেহারা খেলোয়াড়েরা এবং টাচলাইনে অসহায় মুখে মাথা নাড়তে থাকা আরনে স্লট। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে বড় হারের পর ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ছিল, কিন্তু নটিংহ্যাম ফরেস্ট সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই ধুলিসাৎ করে দিল—এমন সহজে, এমন আধিপত্যে, যা অ্যানফিল্ডে এসে খুব কম দলই করতে পেরেছে।
স্লট তাঁর সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ডের দলে নতুন করে ছন্দ খুঁজে পেতে রেকর্ড সাইনিং আলেকজান্ডার ইসাককে শুরু থেকেই নামান। কিন্তু তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ অদৃশ্য—মোটে কয়েকটি ছোঁয়া, শট নেই, হুমকি নেই। ৬৭ মিনিট পর অবশেষে তাঁকে তুলে নেন কোচ।
এমন পারফরম্যান্সে ইসাক একাই দায়ী নন; পুরো দলটি একেবারেই অফ-কলারে। কেবল মোহাম্মদ সালাহ মাঝে মধ্যে চেষ্টা করেছিলেন, বাকিরা যেন মাঠে ছায়ামাত্র।
৩৩ মিনিটে আসে প্রথম ধাক্কা—ফরেস্টের ডিফেন্ডার মুরিলো শক্তিশালী শটে চুপ করিয়ে দেন সদ্য ফেরানো গোলরক্ষক আলিসনকে।
ইগর জেসুসের গোলটি হ্যান্ডবলে বাতিল হলেও বিরতি থেকে ফেরার ৪৭ সেকেন্ড পরই ২-০! সাবেক লিভারপুল ডিফেন্ডার নেকো উইলিয়ামস দারুণ ক্রসে খুঁজে নেন নিকোলা সাভোনাকে—কপের সামনে নির্ভুল ফিনিশ।
লিভারপুলের প্রতিক্রিয়া? প্রায় কিছুই নয়। কোন আগ্রাসন নেই, কোন সংগঠিত আক্রমণ নেই, শুধু হতাশা। ৭৮ মিনিটে আলিসনের সেভ ফেরত বল থেকে মর্গান গিবস-হোয়াইট স্কোরলাইন ৩-০ করেন, আর অ্যানফিল্ড তখন হাওয়াহীন এক স্টেডিয়ামের মতো নীরব।
লিভারপুল বর্তমানে তালিকার ১১তম স্থানে। শেষ সাত ম্যাচের ছয়টিতে হার—এমন পতন একদম অকল্পনীয় একটি দলের জন্য, যারা গত মৌসুমেই প্রায় হাঁটতে হাঁটতেই শিরোপা জিতেছিল।
স্লট যা-ই করছেন, কাজ হচ্ছে না। তার বদলিগুলোতেও দেখা যাচ্ছিল মরিয়া ভাব—৫৪ মিনিটে ডিফেন্ডার কোনাতে তুলে নামানো হুগো একিটিকে তারই প্রমাণ।
অ্যানফিল্ডের দর্শকরা ক্ষোভ দেখাননি, তবে লজ্জাহীন এই পারফরম্যান্স তাদের বিস্মিত ও হতাশ করছেই। এখন প্রশ্ন—কোথায় লুকিয়ে গেছে স্লটের সেই ‘উচ্চাভিলাষী প্রকল্প’? এত দামি স্কোয়াড নিয়ে এমন ছন্নছাড়া ফুটবল কতদিন চলবে?
মন্তব্য করুন