কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ এএম
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

কল্যাণমূলক উদ্যোগ ও চেতনার স্মারক

মোহাম্মদ শাহী নেওয়াজ
কল্যাণমূলক উদ্যোগ ও চেতনার স্মারক

অতিসম্প্রতি একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। দেশের মানুষ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ সম্পর্কে অবগত হয়েছে। ফাউন্ডেশনটি একটি নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে গত ১০ অক্টোবর আত্মপ্রকাশ করে, যা একটি অরাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবীমূলক সংগঠন হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। এ সামাজিক সংগঠনের নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ ও পৃষ্ঠপোষক সমাজসেবা অধিদপ্তর। মানুষ কেন সামাজিক সংগঠন গড়ে তোলে? এ বিষয়ে সবারই সম্যক ধারণা আছে। কতিপয় উদ্যোগী ব্যক্তি বিবিধ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। যেমন—জাতীয়তাবোধ জাগ্রত, সামাজিক কল্যাণ, সামাজিক উন্নয়ন, সচেতনতা, অবক্ষয় প্রতিরোধ, সামাজিক নিয়ন্ত্রণ ও গুণীব্যক্তির স্মৃতি সংরক্ষণসহ বিভিন্ন কারণ। অধিকাংশই আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও সামাজিক কল্যাণের লক্ষ্যে সামাজিক সংগঠন স্থাপন করছে। অন্যদিকে, অনেক স্বনামধন্য রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রীয় খেতাবধারী, উচ্চপদস্থ ব্যক্তি, নন্দিত ক্রীড়াবিদসহ সেলিব্রেটি পরিবার ট্রাস্ট বা ফাউন্ডেশন নামে সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করছে। যার অন্যতম লক্ষ্য সামাজিক কল্যাণের মাধ্যমে ব্যক্তির মর্যাদা ও সুনাম ধরে রাখা।

‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ সাম্প্রতিক প্রতিষ্ঠিত একটি অন্যতম সামাজিক প্রতিষ্ঠান। যার লক্ষ্য হচ্ছে জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, আহত ও শহীদদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা, মানবিক সহায়তা, কর্মসংস্থান ও চিকিৎসাসেবা প্রদান করা। গত ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের সভা শেষে এ ফাউন্ডেশন গঠনের কথা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয় একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ সভ্যদের অংশগ্রহণে; কিংবা কোনো গুণীব্যক্তির পারিবারিক সদস্যদের উদ্যোগে। কিন্তু এ ফাউন্ডেশনটি গড়ে উঠেছে দেশের সরকারপ্রধানের উদ্যোগে। জুলাই বিপ্লবে অনেক তরুণ বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের শপথ নিয়ে জীবন উৎসর্গ করেছেন। যারা সময়ের প্রয়োজনে জীবন উৎসর্গ করতে পারে তারাই কিংবদন্তি এবং জাতির আদর্শ মডেল। দেশপ্রেমিক ও উৎসর্গকারীদের স্মৃতি সংরক্ষণ করে কারা? প্রথমে অতি নিকটবর্তী স্বজনরাই এ দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং লালন করে। কিন্তু জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বয়ং এ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। প্রশ্ন হলো, প্রধান উপদেষ্টা কেন এ দায়িত্ব নিলেন! নিশ্চয়ই নাগরিক দায়িত্ববোধ থেকে। রাষ্ট্রের স্বার্থে অমূল্য জীবন যারা সঁপে দিলেন, তাদের সম্মানে এ প্রচেষ্টা। তাদের স্মৃতি সংরক্ষণে এ কল্যাণমূলক উদ্যোগ। ড. ইউনূস শুধু সরকারপ্রধান নন, বরং সচেতন নাগরিক হিসেবে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। আশা করা যায়, এ ফাউন্ডেশন হবে তারুণ্যের চেতনার স্মারক এবং প্রজন্মের প্রেরণার উৎস।

কালের বিবর্তনে বিশ্বব্যাপী স্বেচ্ছামূলক সামাজিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। মূলত পৃথিবীতে স্বেচ্ছামূলক সামাজিক সংগঠনের যাত্রা শুরু হয় ধর্মীয় মূল্যবোধে তাড়িত হয়ে। সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, ধর্মপ্রচার ও মানবকল্যাণ সাধনের জন্য সামাজিক সংগঠনের সূচনা। বিশ্বে প্রথম স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)। তার নবুয়ত প্রাপ্তির ১৫ বছর আগে ২৫ বছর বয়সে ৫৯৫ সালে কিছুসংখ্যক আরব যুবকের সমন্বয়ে ‘হিলফুল ফুজল বা শান্তি সংঘ’ নামে প্রথম সামাজিক সংগঠন গড়ে ওঠে। সম্ভবত ৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ওকাজ মেলা কেন্দ্র করে কোরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্রের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধ পাঁচ বছরব্যাপী স্থায়ী হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে আরব গোত্রের মধ্যে সমন্বয়, শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, যুদ্ধ বন্ধ করা, বিদেশি বণিকদের নিরাপত্তা, এতিম-অবৈধ শিশুর নিরাপত্তা এবং অন্যায় অবিচারের অবসানের লক্ষ্যে এ শান্তি সংঘ গড়ে ওঠে। ষোড়শ শতাব্দীতে চার্চ ও গির্জাভিত্তিক সমাজসেবা কর্মের সংস্কার সাধন করেন ক্যাথলিক ধর্মযাজক ফাদার ভিনসেন্ট পল। তৎসময়ে তার প্রচেষ্টায় বহু হাসপাতাল, এতিমখানা ও দরিদ্রদের আশ্রয় নিবাস প্রতিষ্ঠিত হয়। ফাদার ভিনসেন্ট সমাজের অসুস্থ, বিকলাঙ্গ ও অসহায়দের সহায়তার জন্য ১৬৩৩ সালে লেডিস অব চ্যারিটি এবং পরবর্তীকালে ডটার অব চ্যারিটি নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।

ভারতীয় উপমহাদেশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে ওঠে কিছু আইন প্রবর্তনের মাধ্যমে। স্বাধীনতার আগে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গঠন ও পরিচালনার জন্য একটি আইন প্রবর্তন করা হয়। ১৯৬১ সালের স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণগুলো নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ নামে জারিকৃত আইনমতে, দেশের সব ধরনের সামাজিক সংগঠনের সৃষ্টি। তা ছাড়া ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল কাউন্সিল ১৮৬০ সালে ‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট’ প্রবর্তন করে। এ আইন অনুসারে কোনো সাহিত্যিক, বৈজ্ঞানিক অথবা চিত্রশিল্পী দাতব্য উদ্দেশ্যে ন্যূনতম সাতজনের সমন্বয়ে স্মারকলিপির মাধ্যমে সমিতি গঠন করতে পারবে। স্মারকলিপি নিবন্ধনের লক্ষ্যে রেজিস্টার অব সোসাইটিসের কাছে দাখিল করতে হবে। পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ ভারতে ১৮৮২ সালে ইন্ডিয়ান ট্রাস্ট অ্যাক্ট নামে একটি আইন প্রবর্তন করা হয়। ট্রাস্ট (Trust) আভিধানিক অর্থ বিশ্বাস। এ আইনমতে, কল্যাণধর্মী ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং কল্যাণমূলক উদ্যোগ বাস্তবায়নের দায়িত্ব অর্পণ করে। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রোমান ক্যাথলিক সন্ন্যাসী বা পাদ্রিরা চার্চের নিয়ম অনুসারে কোনো সম্পত্তির মালিক হতে পারতেন না। তাদের ভরণপোষণ জনগণের দানের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তৎকালে ইংল্যান্ডের জনগণ Brough সম্প্রদায়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ভূ-সম্পত্তি অর্পণ করত এবং সম্পত্তির উপস্বত্ব দ্বারা চার্চের পাদ্রিদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করা হতো। এ ধারাবাহিকতায় ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বর্তমানে ট্রাস্ট আইনের আওতায় বাংলাদেশে কিছু কল্যাণমূলক সামাজিক সংগঠন গড়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রে ট্রাস্টকারী কর্তৃক স্থাবর, অস্থাবর বা ব্যক্তিগত সম্পত্তির জন্য জিম্মাদার নিযুক্ত করা হয়। ট্রাস্টি বা জিম্মাদাররা ট্রাস্ট গঠনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমতে, লক্ষ্যভুক্ত ব্যক্তিদের কল্যাণ নিশ্চিত সাধন করে।

বাংলাদেশে ১৯৬১ সালের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুসারে বর্তমান সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। এ অধ্যাদেশ অনুসারে শিশুকল্যাণ, নারীকল্যাণ, যুবকল্যাণ, রোগীকল্যাণ, কারামুক্ত কয়েদির পুনর্বাসন, কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, নাগরিক দায়িত্ববোধ জাগ্রতকরণ, শারীরিক ও মানসিক অসমর্থদের কল্যাণসহ ১৫টি লক্ষ্যে নিবন্ধিত সামাজিক সংগঠনগুলো পরিচালিত হচ্ছে। সমাজসেবা অধিদপ্তর নিবন্ধিত সামাজিক সংগঠনগুলোর আইনগত পৃষ্ঠপোষক। এ হিসেবে সমাজসেবা অধিদপ্তর সামাজিক কল্যাণ, সুরক্ষা ও সামাজিক সচেতনতা জোরদারকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন কল্যাণমূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশে সমাজসেবা অধিদপ্তর নিবন্ধিত সংগঠন সংখ্যা ৭০ হাজার ৯৯টি। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, নিবন্ধিত সামাজিক সংগঠনগুলো প্রতিনিয়ত পারস্পরিক আন্তঃদ্বন্দ্বে লিপ্ত। কিছু ছদ্মবেশী সমাজকর্মী সংগঠনগুলোকে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যম কিংবা ও ক্ষমতার উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে। একটি মহৎ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের সদস্যরা বিবিধ ধারায় বিভক্ত হচ্ছে। সামাজিক সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বারস্থ হচ্ছে প্রভাবশালী মহল, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কিংবা আদালতের কাছে। আদালতের রায়ে সংস্থার কার্যধারা ব্যাহত হচ্ছে। এতে সংগঠনগুলো লক্ষ্য হারিয়ে প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছে। যাহা অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিবন্ধক।

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন সাম্প্রতিক সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় নিবন্ধিত একটি সংগঠন। জুলাই রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিয়ে, তরুণ সমাজ দেশব্যাপী গণজাগরণ সৃষ্টি করেছে। এ আন্দোলনে অনেকেই আহত হয়েছে, নিহত হয়েছে ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। তরুণরা চলমান দেশে রাজনৈতিক ধারার পটপরিবর্তনের যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছে বুকের রক্ত দিয়ে। আবু সাঈদ, ইয়ামিন ও মুগ্ধদের জীবন উৎসর্গ ছিল দেশের তরে এবং সময়ের প্রয়োজনে এক মহান আত্মত্যাগ। ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন সংগঠন’ নামে এ সামাজিক সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক প্রধান উপদেষ্টা ও সমাজকল্যাণ উপদেষ্টাসহ অনেকেই। এ সংগঠনটি কোনোরূপ ক্ষমতার বলয় প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার নয়, বরং নাগরিক দায়িত্ববোধ জাগ্রতকরণের অনন্য স্মারক। দেশের আত্মত্যাগী তরুণদের স্বপ্ন পূরণে এ স্মারক ফাউন্ডেশন হোক, তারুণ্যের প্রেরণার নিরন্তর উৎস।

লেখক: অধ্যক্ষ, জাতীয় সমাজসেবা একাডেমি, ঢাকা

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভিপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ, কী বললেন প্রক্টর

শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ আটক

২৭ আগস্ট : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

২৭ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা 

আজ থেকে নতুন দামে বিক্রি হবে স্বর্ণ

২৭ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

কৃষিবিদ আসাদুজ্জামান কিটোনকে সংবর্ধনা দিল এ্যাব

মাছ ধরার নৌকায় মিলল সাড়ে ৪ লাখ পিস ইয়াবা, আটক ৯

ভোলায় নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল / এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা

১০

যৌথবাহিনীর অভিযানে অনলাইন জুয়া চক্রের ২ সদস্য আটক

১১

জেলেরা হেলমেট পরে মাছ ধরেন যেখানে

১২

বিমানবাহিনীর আন্তঃঘাঁটি স্কোয়াশ প্রতিযোগিতা সমাপ্ত

১৩

স্পেনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন

১৪

কারাগারে সন্তান জন্ম দিলেন হত্যা মামলার আসামি

১৫

সিলেটের সাদাপাথর লুটের ঘটনায় সিআইডির অনুসন্ধান শুরু

১৬

হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন ৬ সেপ্টেম্বর

১৭

ডাকসুর ভিপি প্রার্থী জালালের বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ

১৮

ডাকসু নির্বাচন / ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার দায়ে বাদ জুলিয়াস সিজার

১৯

ধর্ষণসহ হত্যায় ফুফাতো ভাইয়ের যাবজ্জীবন

২০
X