কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৮ এএম
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সেই দিনটি

বীরপ্রতীক তারামন বিবি

স্মরণ
বীরপ্রতীক তারামন বিবি

তারামন বেগম, তারামন বিবি নামেই অধিক পরিচিত। স্বাধীনতা যুদ্ধের নারী মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে তাকে বীরপ্রতীক খেতাব প্রদান করে। তারামন বিবি ১৯৫৭ সালে কুড়িগ্রাম জেলার চররাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আবদুস সোহবান এবং মা কুলসুম বিবি। তিনি ১১ নম্বর সেক্টরে নিজ গ্রাম কুড়িগ্রাম জেলার শংকর মাধবপুরে ছিলেন। তখন ১১ নম্বর সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন, যিনি তারামনের গ্রামের পাশের একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন। তখন তারামনের বয়স ছিল ১৩ কিংবা ১৪ বছর। পরে তারামনের সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখান এবং তারামন বিবি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে বীরপ্রতীক খেতাব দেওয়া হলেও সে কথা তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর জানতে পারেননি। ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক বিমল কান্তি দে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান আলী এবং রাজিবপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সবুর ফারুকীর সহায়তায় তাকে খুঁজে বের করেন। এরপর ১৯৯৫ সালের শেষদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে বীরপ্রতীক খেতাবের পদক তুলে দেওয়া হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্তদের মধ্যে মাত্র দুজন নারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন তারামন বিবি। তারামন বিবি একই সঙ্গে ছিলেন সাহসী ও প্রখর বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন নারী। যুদ্ধ ময়দানে তার সাহস ও বিচক্ষণতার অনেক গল্প শোনা যায়। একবার সম্মুখযুদ্ধের ঘটনা। মধ্যদুপুরে সবাই খেতে বসেছে। শুধু তারামন বিবি খাওয়া শেষ করে চারপাশে নজর রাখছেন। একসময় তিনি সুপারি গাছের ওপরে উঠেছেন এবং দৃষ্টি রাখছেন। হঠাৎ দেখলেন পাকিস্তানিদের একটি গানবোট দ্রুত ক্যাম্পের দিকে এগিয়ে আসছে। সঙ্গে সঙ্গে জানালেন কমান্ডারকে। সবার খাওয়া চলছে তখন। খাওয়া ছেড়ে সবাই নিজ নিজ অবস্থান নিয়ে নিলেন মুহূর্তের মধ্যে। সন্ধ্যা পর্যন্ত সম্মুখযুদ্ধ চলল। তারামন না দেখলে মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন মাটির সঙ্গে মিশে যেতেন। সম্মুখযুদ্ধ ছাড়াও গুপ্তচর সেজে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ঢুকে তথ্য নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তার ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। চোখের পলকে তিনি দারুণ অভিনয় করতে পারতেন। কখনো এমন হয়েছে, পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ঢুকেছেন মাথায় চুলে জট লাগানো পাগলের বেশে, কখনো সারা শরীরে কাদা লাগিয়ে, কখনো পঙ্গুর অভিনয় করে। পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ঢুকে শুনতেন নানান গোপন তথ্য, ক্যাম্পের সবাই মনে করত নেহাত পাগল। বিভিন্ন অপারেশনের আগে কলার ভেলায় করে তারামন মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পের রসদ, অস্ত্র, গোলাবারুদ পৌঁছে দিয়েছেন জায়গামতো। একাত্তরের সেই সাহসী মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবির আজ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৮ সালের এ দিনে এই মুক্তিযোদ্ধার জীবনাবসান ঘটে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় ঝড়বৃষ্টির আভাস

আজ খোলা থাকবে ব্যাংক

আজ বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

সকালে খালি পেটে যে ৭ কাজ শরীরের ক্ষতি করে

‘স্বল্প সময়ে গণমাধ্যম জগতের শীর্ষ সারিতে কালবেলা’

শনিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

ভোলায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

‘গণমাধ্যমে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে কালবেলা’

আকিজ বশির গ্রুপে ইন্টার্নশিপের সুযোগ

১৮ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১০

পাকিস্তানের হামলায় ৩ ক্রিকেটার নিহত, সিরিজ খেলবে না আফগানিস্তান

১১

নড়াইলে সাড়ে ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না

১২

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

১৩

মালদ্বীপে হাইকমিশনারের সঙ্গে প্রবাসী নেতাদের সভা অনুষ্ঠিত

১৪

জুলাই সনদে সই না করা রাজনীতিকদের প্রতি সালাহউদ্দিন আহমদের বার্তা

১৫

পটুয়াখালীতে কালবেলার তৃতীয় বর্ষপূর্তি উদযাপিত

১৬

‘ছাত্রশিবিরের বিজয় ইসলাম, মানবতা ও দেশপ্রেমের জয়’

১৭

নুরুদ্দিন অপুকে কাছে পেয়ে নেতাকর্মীরা আবেগাপ্লুত

১৮

আসছে অদ্ভুুত সব নিয়ম নিয়ে ক্রিকেটের নতুন ফরম্যাট টেস্ট টোয়েন্টি

১৯

আফগানিস্তানে আবারও পাকিস্তানের বিমান হামলা

২০
X