সেন্ট্রাল উইকেটে তখন কাভার ফাঁকা করে ব্যাটিং অনুশীলন করছিলেন রিশাদ হোসেন। শর্টসগুলো পর্যবেক্ষণ করছিলেন দলের সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। রিশাদকে ব্যাটের মুভমেন্টের খুঁটিনাটিও শোধরাতে দেখা গেল সালাহউদ্দিনকে। সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি সামনে রেখে ব্যাটে দীর্ঘক্ষণ শান দিয়ে নিয়েছেন এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার। লেগ স্পিন স্পেশালিস্ট হলেও কখনো কখনো ব্যাট হাতে বড় রোল প্লে করতে হতে পারে ডানহাতি এই ব্যাটারের। তার প্রস্তুতিই বলা চলে রানাসিংহে প্রেমাদাসায় হলো রিশাদের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আরও একবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার বড় সুযোগের সামনে তারা। এবার নিশ্চয়ই জয়ের আনন্দ নিয়েই বাড়ি ফিরতে চাইবেন রিশাদরা!
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে কখনো সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। বহুবার সুযোগ এসেছিল, সেটা হারিয়েও খেসারত দিতে হয়েছিল। এবার লিটন দাসের নেতৃত্বে নতুন গল্প লেখা হবে কি না, তার উত্তর মিলবে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়। ১-১ সমতায় থেকে সিরিজ নিজেদের করে নিতে পারে কি না বাংলাদেশ, সেটাই দেখার অপেক্ষা। তবে অতীত আক্ষেপ মুছতে চাইলে জেতার বিকল্পও নেই লিটনদের।
২০২৪ সালে ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার বড় সুযোগ হাতছাড়া করেছিল বাংলাদেশ। সেই ক্ষত এখনো তরতাজাই থাকার কথা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১-১ সমতায় থেকে শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। ১৭৫ রানের চ্যালেঞ্জ তাড়ায় লঙ্কান পেসার নুয়ান থুসারার তোপে পড়েন বাংলাদেশের টপঅর্ডার ও মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা। চতুর্থ ওভারেই হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশের ব্যাটিং লন্ডভন্ড করে দেন তিনি। ২৮ রানে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এবার শ্রীলঙ্কার মাটিতে সুযোগটা বাংলাদেশের পক্ষেই বেশি…। ক্যান্ডিতে হারের পর ডাম্বুলায় জয়—স্বস্তির সঙ্গে আত্মবিশ্বাসীও এখন লিটনদের দল।
ডাম্বুলা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরের কলম্বোতে শেষ ম্যাচ খেলতে আসার সময় দারুণ বাস ভ্রমণও হয়েছে শামীম হোসেন, নাঈম শেখদের। শেষটা জিতলে দুই হাজার কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশে ফেরার ভ্রমণটা আরও স্বস্তিদায়ক হবে। তবে চিন্তাও আছে কিছুটা। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠা শামীম হোসেন মাথা ব্যথার কারণে গতকাল অনুশীলনে আসেননি। টিম ম্যানেজমেন্টের আশা, দ্রুতই ঠিক হয়ে মাঠে ফিরবেন তিনি। শেষ ম্যাচের একাদশে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। দল জেতায় উইনিং কম্বিনেশন ভাঙা হবে কি না—এমন প্রশ্নে কোচ সালাহউদ্দিন যদিও বলেছেন, ‘কোনো দলই তো চাইবে না তার উইনিং কম্বিনেশনটা ভাঙার জন্য। এটা নরমালি সবাই করে থাকে (ধরে রাখার চেষ্টা)। কিন্তু আমাদের অনেক সময় ছেলেদের দিকেও তাকাতে হয়। কারণ, ছেলেরাও ইনজুরি থেকে অনেকে আসছে। অনেক ওয়ার্কলোডও আমাদের খেয়াল করতে হয়।’ সে জায়গা থেকে শেষ ম্যাচের একাদশে পেসার সাইফউদ্দিনের জায়গায় দেখা মিলতে পারে তানজিম হাসান সাকিবের। আবার কলম্বোর উইকেট স্পিনবান্ধব হওয়ায় বাড়তি স্পিনারও দেখা যেতে পারে বাংলাদেশের একাদশে। যদিও সালাহউদ্দিন বলেছেন, সাকিব আল হাসান না থাকায় এখন দলে একজন বাড়তি বোলার কিংবা ব্যাটার খেলাতে গেলে অনেক কিছুই চিন্তা করতে হয় তাদের। তারপরও কলম্বোয় বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যান বেশি ইতিবাচক। চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জেতার রেকর্ড; লিটনদের বাড়তি অনুপ্রেরণাও হবে হয়তো।
মন্তব্য করুন