মফস্বল থেকে জাতীয় পর্যায়—প্রতি পদক্ষেপে বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়েছেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। উঠে আসার পথে সহায়ক ছিলেন বিভিন্ন ব্যক্তি, এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও। সে ঋণ শোধ করতেই ফুটবল একাডেমি চালু করলেন জাতীয় দলের এ উইঙ্গার।
সিরাজগঞ্জ সদর থেকে স্বল্প দূরত্বের মাহমুদপুর দক্ষিণ পাড়ায় একঝাঁক খুদে ফুটবলার নিয়ে যাত্রা শুরু হলো এই একাডেমির। ফাহিমের শৈশব গুরু রেজাউল করিম খোকন একাডেমির প্রধান কোচের দায়িত্বে আছেন। বিভিন্ন বয়সের অর্ধশতাধিক ফুটবলার নিয়ে শুরু হলো অনাবাসিক কার্যক্রম। আবাসিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি পূর্ণাঙ্গ একাডেমির স্বপ্ন দেখা ফাহিম ভবিষ্যতে জাতীয় পর্যায়ে ফুটবলার সরবরাহ করতে চান।
‘সিরাজগঞ্জে প্রতিভার ঘাটতি নেই। প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যার। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে খুদে ফুটবলারদের পরিচর্যা হচ্ছে। আমি চাই শৈশব থেকেই সঠিক নির্দেশনা পেয়ে বেড়ে উঠুক আমার এলাকার বাচ্চারা’—কালবেলাকে বলছিলেন ফাহিম। ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর মালদ্বীপের বিপক্ষে চার জাতি ফুটবল প্রতিযোগিতায় জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষিক্ত হন এ ফুটবলার। লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষেকের ৭৪২ দিনের মাথায় একাডেমি উদ্বোধন করলেন। একাডেমির কার্যক্রমে যুক্ত থাকা অন্য ফুটবলারদের ক্যারিয়ারের শেষদিকে এসে এমনটা করতে দেখা যায়।
এ প্রসঙ্গে ফাহিম বলেন, ‘এটি আমার ঋণ শোধের প্রকল্প। সেটি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই করতে চেয়েছি। আমার উঠে আসার পেছনে অনেক গল্প রয়েছে, অনেকের সহায়তা ছিল। আমি চাচ্ছি, সিরাজগঞ্জের আগামী দিনের ফুটবলারদের গল্পটা আমার মতো লড়াই-সংগ্রামের না হয়ে পথটা মসৃণ হোক।’
নিকট অতীতে যমুনা নদীতীরবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে উঠে এসে জাতীয় দলে খেলেছেন মহিউদ্দিন ইবনুল সিরাজী। আবাহনী ও জাতীয় দলের সাবেক এ ফুলব্যাকের পথ ধরে এখন এ জেলাকে প্রতিনিধিত্ব করছেন ফাহিম। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব দিয়ে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করা এ উইঙ্গার আবাহনীতে এক মৌসুম খেলে এবার শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের তাঁবুতে আছেন।
একাডেমি সম্পর্কে ফাহিম আরও বলেন, ‘যে সিঁড়ি বেয়ে আমি আজ জাতীয় দলে এসেছি, সেই মাহমুদপুর এলাকার প্রতি আমি ঋণী। আমরা যারা ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের সবার সহযোগিতায় বদলে যেতে পারে দেশে খেলাটির চেহারা। সে ভাবনা থেকেই একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা।’
২০২১ সালের নভেম্বরে জাতীয় দলে অভিষিক্ত ফাহিম প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ডের দ্বিতীয় লেগে। ১৭ অক্টোবর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মালদ্বীপের বিপক্ষে ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন তিনি। এ গোলের কল্যাণেই দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট পেয়েছে বাংলাদেশ।
২১ বছর বয়সী ফাহিম যতদিন সম্ভব জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে চান। ভবিষ্যতে একাডেমির মাধ্যমে দেশের ফুটবলকে সহায়তা করতে চান।