দুপুর ১২টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্রাউন্ড-২-এ একই সঙ্গে অনুশীলন করার কথা ছিল রংপুর রাইডার্স ও ফরচুন বরিশালের। স্বাভাবিকভাবেই দলের সঙ্গে আসার কথা সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের। তবে তামিম অনুশীলনে না এলেও সাকিব এসেছিলেন প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে। তার আগেই টিম হোটেলে তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে ভারত বিশ্বকাপে ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে বিসিবির গঠন করা তিন সদস্যের বিশেষ কমিটি। দুজনের সঙ্গে আলাদা আলাদা রুমে বৈঠকে টুর্নামেন্টে দলের ব্যর্থতা ও ভবিষ্যতে কীভাবে ভালো করা যায়, সেসব কথা শুনেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। বিসিবি পরিচালকদের আগামী বোর্ড সভায় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন সিরাজ। সাকিব-তামিমের মধ্যকার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব সমাধান করা সম্ভব কি না, সেটাও খোলাসা করেছেন তিনি। তার বিশ্বাস, সমাধান চাইলে এবং করতে জানলে সবকিছুই সম্ভব।
সাকিবের সঙ্গে তামিমের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো নয়—গণমাধ্যমের সামনে বিষয়টি নিয়ে এসে আলোচনা তৈরি করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এরপর থেকে ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যকার সমস্যাগুলো সবার সামনে আসতে থাকে। যেটার ছাপ পড়েছে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা থেকে শুরু করে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে-পরে। বিশ্বকাপ চলাকালে দলের ক্রিকেটারদের মধ্যেও অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতির প্রভাব পড়ে। পুরো টুর্নামেন্টে ভক্ত-সমর্থকদেরও ভাগ হতে দেখা যায়। সবকিছু মিলিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সও ছিল লজ্জার। সেসবের কারণ খুঁজতে এনায়েত হোসেন সিরাজকে প্রধান করে মাহবুবউল আনাম ও আকরাম খানকে নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করে দেয় বিসিবি। এরপর আলাদা আলাদা করে দলের সঙ্গে থাকা খেলোয়াড়, কোচ, নির্বাচক—সবার সঙ্গে বসেছিলেন কমিটির সদস্যরা। তবে বাকি ছিলেন সাকিব ও তামিম। ব্যক্তিগত ব্যস্ততায় তাদের সঙ্গে বসা হয়নি তদন্ত কমিটির। অবশেষে গতকাল সিলেটে তাদের সঙ্গে বসেন তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা। ঢাকা থেকে কয়েক ঘণ্টার জন্য সিলেটে এসে দুজনের সঙ্গে কথা বলেন তারা। তবে কী ধরনের কথা হয়েছে, সেটা এখনই বলতে চাননি তিনি। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এনায়েত হোসেন বলেছেন, ‘আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড, আমরা এখন শেষ পর্যায়ে আছি। শিগগির এটি ক্রিকেট বোর্ডকে জমা দিয়ে দেব। যেহেতু ওদের (সাকিব-তামিম) এখানে (সিলেটে) পেয়েছি। সেজন্য সকালে এসে কথা বলে এখন (গতকাল) চলে যাচ্ছি।’
বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার কারণ সাকিব-তামিম দ্বন্দ্ব—এমনটা মনে করেন অনেকেই। তবে সেটাকে খুব বড় কিছু বলে মনে হয়নি তদন্ত কমিটির। বিসিবির এই পরিচালকের মতে, ‘যেটা দ্বন্দ্ব বলছেন, আমরা আমলে আনছি না, স্থায়ী কিছু না এটা।’ তাহলে কি দুজনের মধ্যকার সমস্যা সমাধান সম্ভব! এমন প্রশ্নে তার উত্তর, ‘সব কিছু সমাধানযোগ্য, যদি সমাধান করতে চান এবং সমাধান করতে জানেন।’ বিসিবির এই পরিচালকের মতে, সমাধান করতে চাইলে এবং জানলে সবই সম্ভব। তামিমও একবার সে কথাই বলেছিলেন। ঘটনাটি সবার সামনে আসার পর গত বছর ইংল্যান্ড সিরিজ শেষে তামিমকেও একই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘সব কিছুই সম্ভব।’ তবে কতটা সম্ভব, সেটা সময়ই বলে দেবে।