সিলেট কিংবা চট্টগ্রাম—টানা ব্যাটিং ও ফিল্ডিং ব্যর্থতার পর টেস্ট সিরিজটা ২-০ ব্যবধানে হেরে গেল বাংলাদেশ। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ শুরুর পর এবার হোঁচট খেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। পুরো সিরিজে ব্যর্থতার জন্য কোনো অজুহাতও খুঁজে পাচ্ছেন না অধিনায়ক শান্ত। তবে উন্নতির বেশ কিছু জায়গা খুঁজে পেলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সেসব নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
ব্যাটিং-ফিল্ডিং ব্যর্থতা
ফিল্ডিং যদি বলেন, সবাই যথেষ্ট অনুশীলন করে। অনুশীলনে প্রতিটি ক্যাচও ধরে। কেন হয়েছে (মিস), এটার উত্তর নেই। ফিল্ডিংয়ে সবাই ভালোভাবেই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ক্যাচগুলো ধরতে পারিনি। পুরো সিরিজে ভালো ব্যাটিং করিনি। এখানে অজুহাত দেওয়ার কোনো সুযোগ। দল হিসেবে পুরো সিরিজে ৪টি ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করিনি।
সাদা বলের মধ্যে লাল বল
এটা একটা কারণ হতে পারে। কিন্তু এই কথাটা আমি বলতে চাই না। কারণ, বর্তমান সময়ে যে রকম খেলা চলছে, এগুলো মানিয়ে খেলতে হবে। হ্যাঁ, যারা তিন ফরম্যাট খেলে না, তাদের হয়তো প্রস্তুতি একটু নেওয়ার সুযোগ থাকে। এখন সামনে যত খেলাই আছে, আমাদের এভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
টেস্টে ব্যাটিং নিয়ে কাজ
অবশ্যই (দীর্ঘ পরিসরে কাজ করার) দরকার আছে। প্রথমে বলব যে, দুটি ম্যাচে ওরা যেভাবে ব্যাটিং করেছে, আমরা এত খারাপ ব্যাটার না। আমাদের সামর্থ্য এর থেকে আরও ভালো। তবে টেকনিক্যালি, মেন্টালি আরও বেশি উন্নতির জায়গা আছে।
ব্যর্থতার পর অপরাধ বোধ চর্চা
অপরাধ বোধের কথাটা! আসলে এ শব্দটা ব্যবহার করতে চাই না। তবে এটা বলতে পারি, দল খারাপ করার পরে খারাপ লাগাটা কাজ করে; কীভাবে আরও ভালো করতে পারি ওই জিনিসগুলো সবসময় সবার মধ্যে থাকে। সবার শতভাগ চেষ্টা থাকে, কীভাবে দলকে ভালো কিছু দিতে পারি।
ধৈর্যের ঘাটতি, টেস্ট মানসিকতা
এই দলে একদমই তরুণ বেশ কয়েকজন নতুন খেলোয়াড় কিন্তু খেলছে। খুব বেশি অভিজ্ঞও নয়। ওই অভ্যাসটা হয়তো আস্তে আস্তে খেলতে খেলতে চলে আসবে। আমার মনে হয় যে খেলোয়াড়রা আছে, সবার মধ্যে খেলার ইচ্ছাটা আছে; আগ্রহ আছে। যদি আরও সময় যায়, দেখবেন যে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে।
ম্যাচ প্রস্তুতির গুরুত্ব
আমরা কোনো সিরিজ খেলতে যাওয়ার আগে সেখানে যদি ‘এ’ দল পাঠাতে পারি, তাহলে সবচেয়ে কার্যকরী হবে। যারা শুধু টেস্ট খেলছে বা যারা এক-দুটি সংস্করণ খেলে, ওরা যদি আগে গিয়ে এক-দুটি ম্যাচ খেলতে পারে; তাহলে কিন্তু প্রস্তুতিটা খুব ভালো হবে। ওই উইকেট ও কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণা হবে। যারা তিন ফরম্যাটে খেলে তাদের জন্য কঠিন। তাদের মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
ঘরোয়া ক্রিকেটের মান
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, হ্যাঁ, যদি উইকেটটা আরেকটু ভালো হয়, যে রকম কন্ডিশনে আমরা খেলব, যে চ্যালেঞ্জগুলো আমরা সামলাব, তাহলে ভালো। কিন্তু আমরা যে চ্যালেঞ্জগুলো এখানে (আন্তর্জাতিক) পাই, তা আমরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পাই না। আমরা নিজেরাও যদি কিছু জিনিস যুক্ত করতে পারি যে চ্যালেঞ্জটা আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সামলাচ্ছি। তাহলে অবশ্যই ভালো। যত ম্যাচ খেলব, উন্নতির কিছু না কিছু জায়গা তত থাকবেই।
টেস্টেও লিটনের ব্যর্থতা
প্রথমত আমি কোনো খেলোয়াড়কে আলাদাভাবে দেখি না। সবার কাছে চাওয়াটা একইরকম থাকে। যার যে রোল আছে, সবাই সেই অনুযায়ী যেন খেলে। লিটন অনেক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ৪টা ইনিংস ভালো যায়নি। আমি আশা করব যে, সামনে কামব্যাক করবে।
সাকিব খেলবেন জানতেন আগেই
আমরা আগে থেকেই জানতাম যে, উনি দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন। প্রস্তুতির ব্যাপার যদি বলেন, ঠিক ছিলেন। হ্যাঁ, অবশ্যই আগে থেকে জানতে পারলে ভালো হবে দলের জন্য। আমি আশা করব যে, আগে থেকেই জানতে পারব। তখন পরিকল্পনাটা পরিষ্কার থাকে। উনি ৩৭ বছর ধরে খেলতেছে, প্রায় একবছর পরে খেলল (টেস্ট)। যতটুকু আশা করেছিলাম, তার চেয়ে বেশি পেয়েছি তার কাছ থেকে।
পেসারদের উন্নতি
অবশ্যই পেসাররা ৩-৪ বছর আগেও মনে হয় এরকম ছিল না। এখন টেস্টে এরকম উইকেটে উইকেট নিচ্ছে। প্রত্যেক বোলার এখন খেলতে চাচ্ছে যে কোনো কন্ডিশনে এবং দলকে ভালো কিছু দেওয়ার আগ্রহটা আছে, যেটা খুবই ভালো দিক।