টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে যা বাংলাদেশের ইতিহাস। এর আগে খেলা সর্বশেষ ৮ টুর্নামেন্টের একটিতেও বাংলাদেশ দুটির বেশি ম্যাচ জিততে পারেনি। এবারই প্রথম এমন কীর্তি নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন দলের। অথচ টুর্নামেন্ট শুরুর আগেও হয়তো কেউ বাংলাদেশ দল নিয়ে এত বেশি প্রত্যাশা করেনি। কিন্তু এমন সাফল্যের ভিড়েও থেকে গেছে বড় দুশ্চিন্তা। টুর্নামেন্টের চার ম্যাচ শেষেও ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতা কাটেনি। টপ অর্ডার ছাড়াই যেন একের পর এক ম্যাচ খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে। মিডল অর্ডারেও ছিল না কোনো ধারাবাহিকতা। এবার সুপার এইট পর্বের তিন ম্যাচ সামনে রেখে সে দুশ্চিন্তা কাটিয়ে ওঠাই হতে পারে শান্তদের বড় চ্যালেঞ্জ।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ খেলেছে তিন ভেন্যুতে। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস থেকে নিউইয়র্ক হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্ট। কোনো ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে বড় রানের চ্যালেঞ্জ দিতে পারেননি শান্ত-লিটন দাসরা। একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ ছিলেন তারা। বিশেষ করে অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের ব্যাটে নেই রানের দেখা। লিটন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিলেও এরপর আর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। আরেক টপ অর্ডার ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিমও ভালো শুরুর পর সেটা এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন কয়েকবার। আর ব্যাকআপ হিসেবে থাকা সৌম্য সরকার তো রীতিমতো হতাশই করছেন টিম ম্যানেজমেন্টকে। অতীতের মতোই এবারও বিশ্বকাপে ছন্দ নেই তার ব্যাটে।
দলের এমন বেহাল টপ অর্ডার থাকার পরও গ্রুপ পর্বে এতগুলো জয়ের পেছনে বড় অবদান বোলারদের। উইকেটের সুবিধা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন তারা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তাইতো দলের বোলারদের কৃতিত্ব দিতে ভুল করেন অধিনায়কও। শান্ত যেভাবে বলেছিলেন, ‘প্রথম রাউন্ডে আমরা যেভাবে খেলেছি, আমি খুব খুশি। আশা করি, সুপার এইটে বোলিংয়ের এই (দুর্দান্ত) পারফরম্যান্স বজায় রাখতে পারব।’ কিন্তু ব্যাটিংয়ের এমন বেহাল দশার কী হবে! চার ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে টপ অর্ডারদের ব্যর্থ হতে দেখা গেছে। টপ অর্ডার ব্যাটারদের মধ্যে কেউই ছুঁতে পারেনি ফিফটির সমান রান। চার ম্যাচে ওপেনার তানজিদ হাসান ১১.৭৫ গড়ে করেছেন ৪৭ রান। আরেক ওপেনার লিটন সমান ম্যাচে ১৪ গড়ে করেছেন ৫৬ রান। আর অধিনায়ক শান্ত ৬.৫০ গড়ে করেন ২৬ রান। এমন বেহাল দশা থেকে মুক্তির আশা করেছেন অধিনায়কও, ‘আশা করি পরের রাউন্ডে (সুপার এইটে) ব্যাটিং ঠিক হয়ে যাবে।’ সুপার এইটের প্রথম দুই ম্যাচের ভেন্যু এন্টিগুয়া। এই মাঠে স্পোর্টিং উইকেটের দেখা মিলতে পারে। কিন্তু উইকেটের ধরন বদলালেও শান্তরা কতটুকু পারবেন, সেটা সময়ই হয়তো বলে দেবে। তবে বোলাররা যে তাদের কাজ শুরু থেকেই করছেন, সেটা বাংলাদেশের সুপার এইটে ওঠাই বলে দেয়। এবার অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাই বোলারদের ধারাবাহিকতার সঙ্গে বাড়তি চ্যালেঞ্জ শান্ত-লিটনদের রানে ফেরা। কেননা, ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বোলারদের ওপর চলে আসে বাড়তি চ্যালেঞ্জ। সেটা কোনো কারণে নিতে না পারলে সুপার এইটেই হতাশ হতে পারেন বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকরাও।