ফেনীর সোনাগাজীতে প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে তিন শিক্ষার্থী পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আহতরা হলো এইচএসসি পরীক্ষার্থী সায়মা সুলতানা, ইসরাত জাহান প্রেমা ও তাসলিমা আক্তার শান্তা। অভিযুক্ত বখাটে রবিউল হাসান বগাদানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক। সে ওই ইউনিয়নের ছোট মাঝিবাড়ির হেলাল উদ্দিনের ছেলে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের কাজীরহাট বাজারের পাশে কালীমন্দিরের সামনে ঘটে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী সায়মা সুলতানা বাদী হয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে তিনজনের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসান ছাড়াও অভিযুক্ত করা হয়েছে তার সহযোগী তুষার এবং মুরাদকে।
অভিযোগ সূত্রে বাদী সায়মা সুলতানা বলে, গত বৃহস্পতিবার বক্তারমুন্সী কলেজে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা শেষে ডাক বাংলো মধুমেলা নামক মিষ্টির দোকানের ভেতর কিছু খাওয়ার জন্য যাই। সে সময় অভিযুক্তরা আমাদের পিছু নিয়ে মিষ্টির দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে তারা আমিসহ আমার বান্ধবীদের উদ্দেশে বিভিন্ন কটূক্তিমূলক কথা বলে। একপর্যায়ে রবিউল হাসান আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট করতে বলে। তার অনুরোধে সাড়া না দিলে রবিউল হাসান দোকানদারের সামনে আমার বোরকা ও হিজাব ধরে টান দেয় এবং হাত ধরে। আমি প্রতিবাদ করলে সে লাথি মারে। কিছুক্ষণ পর আমি ও আমার বান্ধবীসহ ডাক বাংলো অটোরিকশাস্ট্যান্ড থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাড়ির উদ্দেশে রওনা হলে তারা আমাদের অনুসরণ করে। অটোরিকশা দরবেশ ইউনিয়নের কালীবাড়ীর সামনে রাস্তার ওপর দাঁড়ালে তারা আমাদের অটোরিকশা থেকে নামতে বলে। আমি সিএনজি থেকে নামতে অস্বীকৃতি জানালে তারা টেনেহিঁচড়ে জোর করে নামায়। এ সময় তারা আমার সঙ্গে থাকা অন্য দুই বান্ধবীরও শ্লীলতাহানি করে। আমাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন মামুন ফেসবুক আইডিতে শুক্রবার এ বিষয়ে পোস্ট দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা রাতেই তার ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাংবাদিক মামুন গতকাল শনিবার বিকেলে সোনাগাজী মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
তবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হাসান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তার দাবি, তর্কাতর্কি হয়েছে, তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। সাংবাদিককে হামলার চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর দেয়নি।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি হাসান ইমাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ কাজ করছে।
মন্তব্য করুন