ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম নগরীর অন্যান্য বিনোদনকেন্দ্রের চেয়ে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে দর্শনার্থীদের কোলাহল একটু বেশিই। তবে এই পর্যটন স্পটে সবচেয়ে বড় সমস্যা খাবারের দাম। এখানে দোকানিরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছামতো খাবারের দাম রাখেন। দাম নিয়ে দর্শনার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। সাধারণত পতেঙ্গা সৈকতে ফ্রাই ফিশের চাহিদা একটু বেশি। এ ছাড়া লুচি, পরোটা, কোমল পানীয় ইত্যাদিও জনপ্রিয়।
পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সেকান্দার বলেন, খাবারের অতিরিক্ত দাম নেওয়ার বিষয়ে দোকানিদের সঙ্গে দর্শনার্থী প্রায়ই তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে হাতাহাতির দিকে রূপ নেয়। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সি-বিচে গড়ে ওঠা খাবারের দোকানগুলো পতেঙ্গা এলাকার লোকজন নিয়ন্ত্রণ করেন। সুযোগ বুঝে তারা দর্শনার্থীদের পকেট কাটছেন। খাবার ছাড়াও পানির বোতল, সিগারেট ইত্যাদি বিক্রিতে নেন বাড়তি টাকা। তবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলা ব্যক্তিদের কাছ থেকে খুব একটা সুবিধা করতে পারেন না। অনেক সময় ভাষা বুঝে খাবারের দাম কমে বা বাড়ে।
পতেঙ্গার বাসিন্দা সালেহ আহম্মদ বলেন, এক সময় দোকান মালিক সমিতি ছিল। গত ৫ আগস্টের পর সেটি নেই। সৈকতের পাড়ে গড়ে উঠেছে অনেক নতুন দোকান। আবার অনেকে সাগরপাড় সীমানায় অস্থায়ী দোকান দিয়ে ব্যবসা করছেন। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন অবৈধ দোকান উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। সৈকতে ব্যবসায়ীরা মূলত বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থীদের ওপর নির্ভরশীল। দর্শনার্থীদের আগমন না থাকলে তাদের ব্যবসায় ভাটা পড়ে। খাবারের দোকানসহ অন্যান্য সামগ্রী বিক্রিতে অতিরিক্ত দাম নেন।
হালিশহর থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা মো. তপু অভিযোগ করেন, পরিবার নিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে আসা হয়। দুই ঈদে বাধ্যতামূলক পরিবার নিয়ে আসা হয়। এখানে বেশি বিভ্রান্তিতে পড়তে হয় খাবারের ক্ষেত্রে। দামের সঙ্গে খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
আরেক দর্শনার্থী মো. জুনায়েদ বলেন, একটি সুরমা মাছের ফ্রাই খেয়েছি। বিল নিয়েছে এক হাজার টাকার বেশি। কিছু বলারও সুযোগ নেই।
পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, পতেঙ্গা সৈকতে সবসময়ই দর্শনার্থী থাকে। তবে ঈদে একটু বেশি হয়। গত শুক্রবার পতেঙ্গা সৈকতে এক দোকানির সঙ্গে দর্শনার্থীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। খাবারের দাম নিয়েই মূলত এ ঘটনা।
পতেঙ্গা সৈকতে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরীতে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। পতেঙ্গায়ও আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। অতিরিক্ত খাবারের দাম নেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, খাবারের প্যাকেটের গায়ে নির্দিষ্ট দামের চেয়ে বেশি নেওয়া হলে ওইসব দোকানি জেল-জরিমানার আওতায় আসবে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ পতেঙ্গা জোনের ওসি এএইচএম কামরুজ্জামান খান বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে দোকানিদের বলেছি, খাবারের দামের তালিকা অবশ্যই রাখতে হবে। না থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন