জাতীয় পার্টিতে শনির দশা যেন পিছু ছাড়ছেই না। দলে বিভাজনের জেরে একের পর এক শীর্ষ নেতা বহিষ্কার হচ্ছেন। স্থগিত হওয়া সম্মেলন ঘিরে বিভাজন হেতু দলের মহাসচিবসহ শীর্ষ তিন নেতাকে বহিষ্কারের পর আরও চারজন প্রেসিডিয়াম মেম্বারকে সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। একজন প্রেসিডিয়াম সদস্যকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলেও বাকি তিনজনের বিরুদ্ধেও শিগগির সিদ্ধান্ত নিতে পারে দলটি।
নেতারা জানিয়েছেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ দেখিয়ে দল থেকে শীর্ষ নেতাদের বহিষ্কারের নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও মূলত দলের বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও যোগসাজশের অভিযোগে নতুন করে চারজনকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে। এ তালিকায় থাকা সবাই দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য। ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে বহিষ্কারের বিষয়টি দলের প্রেসিডিয়াম সভায় চূড়ান্ত হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বহিষ্কারের শিকার হতে পারেন দলের সাবেক মহাসচিব ও কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদের স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্না, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান ও মাসরুর মওলা। যোগসাজশের অভিযোগ থাকলেও মূলত দলের চাঁদা পরিশোধ না করার দায়ে তাদের বহিষ্কার করা হতে পারে।
নেতারা জানায়, গত ২০ জুলাই দলের এক প্রেসিডিয়াম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীর উপস্থিতিতে দলের এ চার নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। তবে প্রথম ধাপে ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। বাকিদের বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
সূত্র জানায়, স্থগিত হওয়া ২৮ জুনের সম্মেলন ঘিরে যে উত্তেজনা শুরু হয়, তারই জেরে জাপা এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের একক ক্ষমতা বলে সম্মেলন স্থগিত করলেও পাল্টা সম্মেলনের ঘোষণা দেন দলটির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার এবং মুজিবুল হক চুন্নু। এনিয়ে দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় দলে উত্তেজনা ছড়ায়। জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রের ২০ (ক) ১ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী দলের চেয়ারম্যান এ তিন নেতাকে সংগঠনের সব পদ-পদবি—এমনকি প্রাথমিক সদস্য পথ থেকেও অব্যাহতি দেন শীর্ষ তিন নেতাকে।
জাপার মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী কালবেলাকে বলেন, দলের প্রেসিডিয়াম বৈঠকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আপাতত চূড়ান্ত হয়েছে প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকাকে দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার।
মন্তব্য করুন