পিছিয়ে গেল আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের উদ্বোধন। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
গতকাল রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আখাউড়া-আগরতলা প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিঞা।
কবে এটি উদ্বোধন হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো তারিখ নির্ধারণ হয়নি। সরকার থেকে যখন সময় দেওয়া হবে, তখন বলা যাবে। আপাতত হচ্ছে না। উদ্বোধনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত হলে সবাইকে জানানো হবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয় অনেক আগে। সম্প্রতি রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জি-২০ সম্মেলনে ভারত সফরের সময় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সময় মিলে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন। সেটি না হওয়ায় এখন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পটি উদ্বোধন করার চিন্তা করা হচ্ছে। তাও যদি না হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উদ্বোধনের জন্য নতুন করে সময় চাওয়া হবে।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. ইয়াছিনের নেতৃত্বে কাজ পরিদর্শন করে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি প্রতিনিধিদল। সে সময় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রেলপথ উদ্বোধন করার কথা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে সড়কপথের পাশাপাশি রেলপথেও চট্টগ্রাম বন্দর এবং রাজধানী থেকে পণ্য যাবে সেভেন সিস্টার্স হিসেবে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে। গত ২২ আগস্ট থেকে এ পথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর মধ্যে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশ অংশে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। দেড় বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে বাংলাদেশ অংশে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের ১৬টি সেতু ও কালভার্টের কাজও শেষ। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ৯৫ ভাগ। বাংলাদেশ অংশের সাড়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন