ওয়াসা অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করলেও নাগরিকদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি ইমেজ সংকটে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম শফিকুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের ‘পানির অপচয় রোধ ও এলাকাভিত্তিক পানির মূল্য নির্ধারণে নাগরিক মতামত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায়, পানি ও নদী নিয়ে গবেষক আমিনুল রসুল, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, তরুণ সংঘের চেয়ারম্যান ফজলু হক, সোহেল প্রমুখ।
ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে নাগরিক সচেতনতা গড়তে কর্মসূচি গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে শফিকুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি রোধে শতভাগ প্রযুক্তিবান্ধব মিটার ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। সেইসঙ্গে পানির লিকেজ বন্ধ, এলাকাভিত্তিক নজরদারি জোরদার, পানির অপচয় রোধে নাগরিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ওয়াসা একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। ভোক্তা অধিদপ্তরও সরকারি প্রতিষ্ঠান। আমাদের কাছে ওয়াসা নিয়ে অনেক অভিযোগ আসে; কিন্তু আরেকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
উত্তম কুমার রায় বলেন, আইএমএফ পানিতে ভর্তুকি দিতে সরকারকে বারবার নিষেধ করছে। ভর্তুকি তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে; কিন্তু সরকার এবং ওয়াসা এখন পর্যন্ত ভর্তুকি অব্যাহত রেখেছে। পানির মূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ওয়াসার পানির মূল্য হবে তিন স্তরে। যেমন নিম্নআয়ের মানুষের পানির দাম হবে বর্তমান উৎপাদন খরচের চেয়েও কম। মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য মূল্য হবে উৎপাদন খরচের সমান। আর উচ্চবিত্তদের পানির মূল্য হবে উৎপাদনের খরচের চেয়েও বেশি।
মূল প্রবন্ধে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুরের পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। বিশ্বের সেরা পানি বিশেষজ্ঞদের মতামত আগামী বিশ্বযুদ্ধ হতে পারে পানি নিয়ে। তাই আগামী দিনের এবং আগামী প্রজন্মের জন্য পর্যাপ্ত পানির নিরাপদ ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি নাগরিকদের জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন