গত ২৮ জানুয়ারি নিজ দপ্তরে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার হাতে লাঞ্ছিত হন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) সহকারী রেজিস্ট্রার মো. শেখ শাহজামাল। বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে তাকে মারধর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি কালবেলায় ‘পাবিপ্রবির আতঙ্ক বাবু গ্রুপ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনে বাবু গ্রুপের নানান অপকর্ম তুলে ধরা হয়। এর পরই নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন; গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। তবে সে কমিটি এখনো কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। অন্যদিকে, রেজিস্ট্রার বরাবর মারধরের অভিযোগ দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈরী আচরণের মুখে পড়েছেন শেখ শাহজামাল। তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, শাহজামালের কক্ষ তালাবদ্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই কক্ষ থেকে তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও বের করতে দেওয়া হচ্ছে না। মৌখিকভাবে অফিসে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। এরই মধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারির এক আদেশে শেখ শাহজামালকে শারীরিক শিক্ষা দপ্তর থেকে পরিকল্পনা উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের উল্লাস করতে দেখা গেছে। তাকে দেখলেই তারা হাসাহাসি, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছে বলে
অভিযোগ শাহজামালের। এ নিয়ে তিনি বিব্রত।
ভুক্তভোগী সহকারী রেজিস্ট্রার মো. শেখ শাহজামাল কালবেলাকে বলেন, ‘আমাকে আমার দপ্তরে এসে মারধর করল। সেটার বিচার পেলাম না। তদন্ত কমিটি হলেও তারা এখনো কোনো প্রতিবেদন দেয়নি। এরই মধ্যে আমাকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। আমাকে ক্যাম্পাসে তারা (অভিযুক্তরা) দেখলে হাসাহাসি করে। আমার কক্ষ তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কক্ষ থেকে কোনো কাগজপত্রও নিতে দিচ্ছে না। এ ছাড়া একের পর এক হুমকিতে জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও আমি সংশয়ে আছি।’
এদিকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করলেও কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। ফলে তদন্ত নিয়েও তৈরি হয়েছে এক ধরনের ধোঁয়াশা। তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির আহ্বায়ক ও ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুল্লাহ কালবেলাকে বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম চলমান। আমরা তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে বসে আমাদের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছি।’ কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হতে পারে—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। তদন্তের কাজ চলছে, শেষ হতে সময় লাগবে।’
শেখ শাহজামালকে বদলির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম কালবেলাকে বলেন, ‘তাকে বদলির বিষয়টি রুটিন ওয়ার্ক।’ পরে আবার বলেন, ‘সে-ই (শাহজামাল) বলেছিল যে, সে ওখানে থাকতে চায় না। যে কারণে তাকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে।’ কক্ষ তালাবদ্ধ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। সে (শাহজামাল) আমাদের এ ব্যাপারে কিছু বলেনি।’