সাধারণ সময়ের তুলনায় ঈদের ছুটিতে মানুষের চলাচল বৃদ্ধি পায়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতে, আসন্ন ঈদুল ফিতরে রাজধানীর বাইরে যাবে সোয়া কোটির মতো মানুষ। এ সময় জনসমাগম হওয়া স্থানগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্কে বিঘ্ন ঘটে। বিশেষ করে রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাটে সমস্যা তীব্র হয়। এবার নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক দিতে নানামুখী প্রস্তুতি নিয়েছে মোবাইল টেলিকম অপারেটরগুলো। গ্রামীণফোন এ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ব্যবহার করছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স (এআই)।
দেশের সর্ববৃহৎ মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর গ্রামীণফোনের গ্রাহক প্রায় সোয়া ৮ কোটি। তারা ঈদে গ্রাহকদের নির্বিঘ্ন সংযোগ নিশ্চিতে নেটওয়ার্কের সক্ষমতা বাড়াতে একটি ‘ডাইনামিক ক্যাপাসিটি সেটআপ’ বাস্তবায়ন করেছে। এর মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রাহকদের ভৌগোলিক অবস্থান পরিবর্তন এবং ব্যবহারের প্রয়োজনের পূর্বাভাস পাবে গ্রামীণফোন। ফলে গ্রাহকদের চাহিদা জেনে তা পূরণ করতে শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন সেবা এবং সেরা গ্রাহক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা সম্ভব। নিরবচ্ছিন্ন ডেটা ও ভয়েস সেবা প্রদানের লক্ষ্যে উপাত্ত এবং এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নিজস্ব নেটওয়ার্ক সল্যুশন ডিজাইন করেছে অপারেটরটি।
গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার মোহাম্মদ সাজ্জাদ হাসিব বলেন, উন্নত এআই প্রযুক্তি, শক্তিশালী অবকাঠামো এবং গ্রাহককেন্দ্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন ডেটা ও ভয়েস সেবা প্রদানে নিবেদিতভাবে কাজ করছে গ্রামীণফোন। এ ছাড়া ঈদের সময় যেসব স্থানে নেটওয়ার্কের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন, এমন পাঁচ শতাধিক হটস্পট চিহ্নিত করেছে গ্রামীণফোন।
প্রায় সাড়ে ৪ কোটি ব্যবহারকারীর অপারেটর বাংলালিংকও ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি লাঘবে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে ফোর-জি নেটওয়ার্ক সেবার মান বৃদ্ধির দাবি করেছে অপারেটরটি। তারা বলছে, বর্ধিত এই নেটওয়ার্ক দেশের প্রতিটি প্রান্তে সবার জন্য দ্রুততম ফোর-জি সেবা নিশ্চিত করবে।
এ বিষয়ে বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষকে স্বস্তি দিতে নানারকমের কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করতে পেরে আমরা গর্বিত ও আনন্দিত। আমরা মানুষকে ঈদযাত্রার কষ্টদায়ক অভিজ্ঞতা থেকে পরিত্রাণ দিতে চাই।
রবিও ‘ডায়নামিক ক্যাপাসিটি লোডিং’ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ঈদে গ্রাহক সেবা নিশ্চিতে রবি সবসময়ই আগাম প্রস্তুতি নেয়। যেসব স্থানে নেটওয়ার্কের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন সেসব জায়গায় ডায়নামিক ক্যাপাসিটি লোডিং বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ফলে রবির বিস্তৃত ৪.৫ জি সুপারনেট অবকাঠামোর ওপর গ্রাহকরা নিশ্চিতভাবে নির্ভর করতে পারবেন।
গত এক বছরে রবির ডেটা স্পিড ১৩০ শতাংশ এবং ভয়েস কোয়ালিটি ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ১ হাজারের বেশি সাইট যুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে সর্বোচ্চ ফোরজি কভারেজ (৯৮.৮%) নিশ্চিত করা হয়েছে।