খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) কাউন্সিলর শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্সকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে। কাউন্সিলরকে হুমকি ও গালাগালের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত ইসরাফিল জনি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের গত কমিটিতে সহসভাপতি ছিলেন। তার বাড়ি নগরীর দৌলতপুর থানার দেয়ানায়। বর্তমানে নিজেকে যুবলীগ নেতা দাবি করলেও তার কোনো পদপদবি নেই।
এদিকে সহকর্মীকে হুমকির ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কেসিসির অন্য কাউন্সিলররা। তারা বিষয়টি নিয়ে সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেকের কাছে নালিশও করেছেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কাউন্সিলর প্রিন্সকে ফোন করছেন জনি। মোবাইল ফোনে সেই মুহূর্তটির ভিডিও ধারণ করছেন তার দুই অনুসারী। এ সময় জনিকে বলতে শোনা যায়, ‘সেভ অ্যান্ড সেফের সামনে বসা নিয়ে টিটু ভাইয়ের কাছে নালিশ করেছে কে? তোর কাউন্সিলরগিরি..., তোমাকে ঠেকাবে (বাঁচাবে) তোমার কোন আব্বা।’ পরে আরও গালাগাল করে কাউন্সিলরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কোনো পদে না থাকলেও দলের নাম ব্যবহার করে সুবিধা আদায়, মানুষকে হুমকি-ধমকি দেওয়াসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত জনি।
ভুক্তভোগী প্রিন্স কেসিসির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। তার বাবা শেখ শওকত আলী বিএনপির নেতা এবং ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর প্রিন্স বিএনপির সমর্থন নিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। পরে ২০১৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
এ বিষয়ে শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স বলেন, ‘একটি সালিশ কেন্দ্র করে এলাকায় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত জনির সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয়। এ নিয়ে দৌলতপুর থানার ভেতরেই সালিশ বৈঠকে আমাদের গালাগাল করেছে সে। এ ছাড়া দৌলতপুর সেভ অ্যান্ড সেফের সামনে জনি ও তার অনুসারীদের অসামাজিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যবসায়ীরা আমার কাছে অভিযোগ করে। বিষয়টি দলের আরেক নেতাকে জানিয়ে জনিকে সতর্ক করার অনুরোধ করি। এটা জানতে পেরে সে আমাকে ফোন দিয়ে গালাগাল করেছে।’
তিনি আরও বলেন, কয়েকদিন ধরে দেখছি, আমার নিকটজনদের কাছে গালাগালের সেই ভিডিও পাঠানো হচ্ছে। বিষয়টি মেয়রকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছি।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, পেশিশক্তি প্রদর্শন সহ্য করা হবে না।
অভিযুক্ত ইসরাফিল জনি বলেন, ‘প্রিন্সের পুরো পরিবার বিএনপি করত। তার ভাই মিল্টন এখনো নাশকতা মামলার আসামি। তারা বিভিন্ন সময় আমাকে নিয়ে কটূক্তি করে। আমাদের এলাকার একজন অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে নিয়ে সালিশে অন্যায্য বিচার করেছে। এ ছাড়া আমার নামে নেতাদের কাছে মিথ্যা নালিশ করেছে। তাই তাকে সামান্য বকা দিয়েছি।’
দৌলতপুর থানার ওসি প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, কাউন্সিলর জিডি করার পর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।