আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন যত কাছে আসছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং পরোক্ষভাবে তাদের হুমকি দিচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘দুরভিসন্ধিমূলক ও বিভ্রান্তিকর’ বক্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপি সাম্প্রদায়িকতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করে বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় উপাসনালয়, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সে সময়কার মন্ত্রী-এমপিদের সরাসরি নির্দেশে বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছিল বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের পাশবিক অত্যাচারের হাত থেকে শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই রেহাই পায়নি। সারা দেশে প্রায় ৫০ হাজার নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, বিএনপির রাজনীতি হলো পাকিস্তানি ভাবাদর্শের রাজনীতি; উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার। ভারতের বাবরি মসজিদের ঘটনার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে বিএনপি মহাসচিব নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। অথচ সে সময় বিএনপির ক্যাডার বাহিনী ও তাদের উগ্র সাম্প্রদায়িক দোসরদের হামলায় রক্তাক্ত প্রান্তরে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। হিন্দু সম্প্রদায়, তাদের উপাসনালয় ও বাড়িঘরের সুরক্ষা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল তৎকালীন বিএনপি সরকার। সে সময় শুধু ঢাকা শহরেই অসংখ্য মন্দির ভাঙচুর এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর পৈশাচিক হামলা ও নির্যাতন করা হয়েছিল। শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ই নয়, বিএনপি তখন সাধারণ মানুষের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। মির্জা ফখরুলরা যতই মিথ্যাচার করুন না কেন, বাংলাদেশের মানুষ বিএনপি শাসনামলে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সেই ভয়াবহ উত্থানের কথা ভুলে যায়নি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল জাতিরাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। সংবিধানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির শক্তিশালী ভিত রচিত হয়। বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং ধর্ম-বর্ণ জাতি-লিঙ্গ শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়। আওয়ামী লীগ সেই অঙ্গীকার ধারণ করেই রাজনীতি করে আসছে। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, দেশের সব নাগরিক সমান; সবার ধর্ম পালনের সমান স্বাধীনতা ও অধিকার রয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সেই নীতি অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে সব সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্য করুন