কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখার মসজিদে পছন্দের ইমাম রাখা নিয়ে বিরোধের জেরে জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর কলেজের ডিগ্রি শাখার প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়েছে ওই মসজিদের অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহর অনুসারীরা।
এ ঘটনার ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, জুমার খুতবার আগে মসজিদের মিম্বরে মুসল্লিদের উদ্দেশে কথা বলেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তারা বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধ কখনো কাম্য নয়। কলেজ মসজিদের অব্যাহতি পাওয়া ইমাম মারুফ বিল্লাহকে সসম্মানে বিদায়ের পাশাপাশি বর্তমান ইমামকে বাদ দিয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ দিতে হবে। তবে এ কথা মানেনি অব্যাহতি পাওয়া ইমামের অনুসারীরা। খুতবা চলাকালে তারা বের হয়ে যান মসজিদ থেকে। নামাজ শেষ হতেই বিভিন্ন অশ্লীল স্লোগান দিয়ে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থাকা জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়ে দেন তারা।
এর আগে ১৩ জানুয়ারি ওই মসজিদে তাবলিগের মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার জেরে ২০ জানুয়ারি তাবলিগের সাপ্তাহিক তালিম সাময়িকভাবে বন্ধের ঘোষণা করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবুল বাসার ভূঞা। ২১ জানুয়ারি অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে ওই ইমামের অনুসারীরা। এরপর ওই ইমামকে অব্যাহতি দেয় কলেজ প্রশাসন। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
পতাকা অবমাননা নিয়ে কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাঈদ আহমেদ বলেন, এ কেমন কাজ! দোষ করলে মানুষ করছে। জাতীয় পতাকার অবমাননা করল কেন? কলেজ প্রশাসনের উচিত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
অভিযুক্ত ইমাম মারুফ বিল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
অধ্যক্ষ আবুল বাসার ভূঞা বলেন, জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা উত্তোলন রাষ্ট্রদ্রোহ কাজের সমান। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নেব। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন