আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে বিএনপিকে সরিয়ে দিতে সরকার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে স্থগিত থাকা মামলাগুলো আবারও সচল করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—নির্বাচনের আগে বিএনপিকে মাঠছাড়া করা। ক্যান্ডিডেট যদি না থাকে, তখন নির্বাচন কি হবে? আজকে সেই লক্ষ্যে তারা নেমেছে। লক্ষ্য একটাই—আবারও বিনা ভোটে জোর করে, কারচুপি করে যেনতেনভাবে ক্ষমতা দখল করা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সম্প্রতি নরসিংদীতে চক্রান্তমূলক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য খায়রুল কবির এবং তার স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানাসহ প্রায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। খায়রুল কবিরের বাসভবন এবং বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এটা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রত্যক্ষ যোগসাজশে কিছু সন্ত্রাসী দিয়ে নরসিংদীতে এ হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সময়ে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়েছে। এগুলো খায়রুল কবিরসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলা, চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনকে প্রতিহত করার হীন প্রচেষ্টা বলে দাবি করেন তিনি। চট্টগ্রামে স্থাপনা ভাঙচুরের
ঘটনা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বুধবার চট্টগ্রামে তারুণ্যের সমাবেশ ছিল। সমাবেশ থেকে ফিরে যাওয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। ছাত্রলীগ-যুবলীগের ছেলেরা নিজেরাই স্থাপনা ভাঙচুর করে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। যুবদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি তাদের মুক্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, নরসিংদী জেলার সদস্য সচিব মনজুর এলাহী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’ পালনের অংশ হিসেবে গতকাল সকালে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফোরাম’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। নির্বাচনে কারচুপি করতে সরকার এখন থেকেই প্রশাসন সাজাচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ওরা (আওয়ামী লীগ) নির্বাচন কিন্তু শুরু করে দিয়েছে। রিগিং করতে হবে, সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, সেই কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। পুলিশের ব্যাপক রদবদল, ব্যাপক পদোন্নতি। সচিবদেরও রদবদল অর্থাৎ প্রশাসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। একটাই উদ্দেশ্য, নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা তাদের মতো করে সবকিছু সাজিয়ে তু্লছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে এখন একটাই পথ, সেটা হলো—রাস্তায় নামা।
সংগঠনের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন ঠাকুরের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর শিকদারের সঞ্চালনায় এতে বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য কাদের গনি চৌধুরী ও সাংবাদিক নেতা এম এ আজিজ বক্তব্য দেন।
মন্তব্য করুন