বরিশাল মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রইজ আহমেদ মান্নার নেতৃত্বে জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও বিদায়ী কাউন্সিলর এ কে এম মুর্তজা আবেদীনের ওপর হামলা ও তার লাইসেন্স করা রিভলবার ছিনতাইচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে থাকা ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্য রিভলবারটি হেফাজতে নেন। এ ছাড়া মুর্তজা আবেদীনকে হেফাজতে নিয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে নগরীর লঞ্চঘাট জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে মুর্তজা আবেদীনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন শ্রমিক লীগ নেতা রইজ আহমেদ মান্না। তার অভিযোগ কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে মুর্তজা গুলি চালানোর চেষ্টা করলে প্রতিহত করেছেন তারা। মুর্তজা আবেদীন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল জেলা কমিটির আহ্বায়ক। শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক রইজ আহমেদ মান্না মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম বলেন, ‘ঘটনাস্থলের সিসি ফুটেজ ও ফোনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কাউন্সিলর মুর্তজা আবেদীন বলেন, ব্যক্তিগত কাজে সেটেলমেন্ট অফিসে যাই। এ সময় ভবনের ওপর থেকে দেখতে পাই রইজ আহমেদ মান্না, তার ভাই নাদিম ও মিঠুসহ তাদের ৩০-৪০ জন অনুসারী সেটেলমেন্ট অফিসের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হচ্ছেন। তাদের দেখে ফোনের ভিডিও চালু করে অফিস থেকে বের হই। বাইরে বের হতেই ‘শালা আমার বৌয়ের গায়ে তুই হাত দিছো’ বলে মান্না ও তার অনুসারীরা আমার ওপর হামলা চালায়। আমার কোমরে থাকা লাইসেন্স করা অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে চায়। পরে ট্রাফিক পুলিশ এসে আমার আগ্নেয়াস্ত্রটি হেফাজতে নেয়।
মুর্তজা বলেন, আমি ২ নম্বর ওয়ার্ডে টানা ৫ বারের কাউন্সিলর। জনপ্রিয় হওয়াই আমার অপরাধ। মান্না কারাগারে থাকাবস্থায়ও তার নির্দেশে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিক হামলা চালিয়েছে তার লোকজন। রোববারের হামলার ঘটনায় মামলা করবেন বলে জানান মুর্তজা আবেদীন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রইজ আহমেদ মান্না বলেন, আমাদের জমাজমির বিষয়ে একটি ঝামেলা ছিল। সেই কাজের জন্য আমি ভূমি অফিসে যাই। কাজ শেষ করে যখন বের হই, তখন পাশ থেকে এসে মুর্তজা আবেদীন পিস্তল বের করে আমাকে গুলি করার চেষ্টা করে। এ সময় আমার সঙ্গে আরও ৩-৪ জন ছিল। তারা পুরো বিষয়টি দেখেছে। তারা এবং স্থানীয়রা মুর্তজাকে গুলি করতে বাধা দেয়। পরে স্থানীয় ট্রাফিক পুলিশ এসে ওই পিস্তলটি নিয়ে যায় এবং মডেল থানায় ফোন করা হলে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি যেহেতু একটি সংগঠন করি। তাই সিনিয়রদের বিষয়টি জানিয়েছি। অবশ্যই আমি চাই তার শাস্তি হোক।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হামিদুল আলম বলেন, ভূমি অফিস থেকে বের হওয়ার পর মুর্তজা ও মান্নার সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে মুর্তজা আবেদীন পিস্তল বের করেন। তিনি বৈধ পিস্তলের অবৈধ ব্যবহার করছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আপাতত তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন।
মন্তব্য করুন