ফারুক হোসেন আর লাবলু হোসেন। সম্পর্কে যদিও শ্বশুর-জামাই, তার পরও মিলেমিশেই করেন ইয়াবার ব্যবসা। শ্বশুর ফারুক হোসেনের কাছেই ব্যবসার হাতেখড়ি। তার পরামর্শেই মাদক ব্যবসায় জড়ান টিকটকার জামাই লাবলু হোসেন। তবে এখন ইয়াবা ব্যবসায় উত্তরাঞ্চলের হোতা বলা যায় এই জুটিকে। বাড়ি গাইবান্ধায় হলেও মাদক সংগ্রহ করতে নিজেরাই আসেন রাজধানীতে। কারবারীদের কক্সবাজার থেকে আনা ইয়াবার চালান নিয়ে যান নিজ জেলায়। এর আগেও বড় চালান নিতে দুবার এসে ফেরত গেছেন খালি হাতে। তবে এবার ইয়াবা হাতে পেলেও গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি। তার আগেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (উত্তর) কাছে ধরা পড়েন এ মানিকজোড়। ফাঁস হয় তাদের জারিজুড়ি, ভেস্তে যায় মাদক ব্যবসার পরিকল্পনা।
গত রোববার ঢাকার উত্তরায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সঙ্গে থাকা শপিং ব্যাগ থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার জামাই-শ্বশুর জানান, গুলিস্তান থেকে ওই ইয়াবা সংগ্রহ করে তারা চলে যান গাজীপুর। সেখান থেকে আবার তারা উত্তরা আসেন বাসে গাইবান্ধা যাওয়ার উদ্দেশে। সেখানেই তারা গ্রেপ্তার হন।
আসামি লাবলু হোসেন জানান, তার বাড়ি জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায়। বিয়ে করেছেন গাইবান্ধায়। এর আগে গার্মেন্টসে চাকরি করলেও বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেই স্থায়ী হন। শ্বশুর ফারুক হোসেন আগে রিকশা চালালেও এখন ইয়াবা ব্যবসায় যুক্ত। তার সঙ্গেই যুক্ত হন এ কারবারে। এরপর গাইবান্ধাসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় শুরু করেন ইয়াবা ব্যবসা। এর আগে ঢাকা থেকে ছোট ছোট চালান নিলেও, এবার এসেছিলেন বড় চালান নিতে। ইয়াবা ব্যবসার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টিকটক করতেও দেখা যায় লাবলুকে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের (উত্তর) সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান কালবেলাকে জানান, এই দুজন দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবার ব্যবসা করছে। তাই অনেকদিন ধরে নজরদারিতে ছিল। কয়েকদিন আগেও দুবার তারা ঢাকায় আসে মাদক নিতে। কিন্তু সেসময় খালি হাতে ফেরত যাওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এবার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে উত্তরা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সিনথেটিক শপিং ব্যাগের ভেতরে ২৫টি নীল রঙের জিপারযুক্ত ছোট পলিপ্যাকেটে ১০ হাজার ইয়াবা লুকিয়ে রেখেছিল তারা। তল্লাশি চালিয়ে সেগুলো জব্দ করা হয়। যার মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা। ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইলও জব্দ করা হয়। মোবাইলে থাকা নম্বর ও মেসেজ যাচাইবাছাই করে দেখা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে আর কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত করে জানা যাবে।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান এই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা।