খিলগাঁওয়ে ইফতার বাজারে আসতে শুরু করেছে মানুষ। কয়েকদিন পর বিক্রি বাড়তে পারে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। এখানকার রেস্তোরাঁগুলো ও ইফতারির বাজারে মিলেছে বাহারি রকমের সুস্বাদু সব পদ। প্রতি বছর রোজার এ সময়ে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া থেকে তালতলা মার্কেট পর্যন্ত জমজমাট হয়ে ওঠে ইফতারির বাজার। মানুষের ভিড়ে খিলগাঁওয়ের এই ইফতারির বাজারটি গমগম করতে থাকে। খিলগাঁওয়ের রেস্টুরেন্ট পাড়া হিসেবে পরিচিত এই এলাকাটি এমনিতেই ভোজনরসিকদের কাছে বেশ প্রিয়।
এখানকার ব্লু মুন, রুফটপ, বিএফসি, কেএফসি, বেঙ্গল মিট, গোল্ডেন চিক, চেরি ড্রপস, কোকো, প্রোপেস, বাবাডেরা, লাভ ল্যান্ড, ফ্লেমস্ অব কোরিয়া, গ্রাউন্ড বিসট্রো, ব্যাসিলিকোসহ রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে সবসময় ভিড় লেগেই থাকে। রোজা উপলক্ষে রেস্তোরাঁগুলো বাহারি রকম খাবারের পসরা সাজিয়ে নানা রকম অফার ও ডিসকাউন্ট সুবিধা দিচ্ছে। তবে আশপাশের সৌন্দর্যকেও গুরুত্ব দিচ্ছে, রুফটপ, ব্লু মুন, বাবাডেরা, চেরি ড্রপস রেস্তোরাঁ। এলাকাটি একটু খোলামেলা হওয়ায় নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশ পাওয়া যায়। এসব রেস্তোরাঁয় আলাদা ইফতারি উপকরণের পাশাপাশি বুফে প্যাকেজও রয়েছে। ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে ৪০-৫০ আইটেমের প্যাকেজ। ফ্রাইড রাইস থেকে শুরু করে খাবার শেষের মিষ্টান্নÑসবকিছুতেই পরিপূর্ণ ইফতার বুফে।
গতকাল বৃহস্পতিবার খিলগাঁও এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইফতারের আগ মুহূর্তে রেস্তোরাঁগুলোর ভেতরে মানুষের ভিড়। রাস্তার দুপাশে ইফতারির ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও ছিল ভিড়। এ দোকানগুলোতে আসা বেশিরভাগ ক্রেতা ইফতার নিয়ে বাসায় যান। খিলগাঁও সিটি করপোরেশন মাকের্টের (তালতলা) পাশেও মানুষের ভিড়। কেউ কিনছেন ভাজাপোড়া, কেউ কিনছেন হালিম ও লাচ্ছি। এখানে কথা হয় আলিফ নামের এক যুবকের সঙ্গে। তিনি বলেন, তালতলা ইফতারের নানা রকম খাবারের জন্য বিখ্যাত। এখানে বেশ ভালো মানের হালিম, বেগুনি, কাবাব, জিলাপি, ডিমের ও আলুর চপসহ নানা ধরনের ইফতার সামগ্রী পাওয়া যায়।
মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার ব্যাসিলিকো রেস্তোরাঁয় এসেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আলিফ ও তার বন্ধুদের সঙ্গে। তারা বলেন, আজ বন্ধুরা ইফতার করতে মিলিত হয়েছি। এই এলাকার রেস্টুরেন্টগুলো বেশ ভালো। এদের ইফতার আয়োজনও বেশ সাশ্রয়ী। তাই এখানে আসা।
রাফিন আল বাকেরের বাসা কমলাপুর। তিনি কাজ করেন খিলগাঁওতে একটি শো রুমের ম্যানেজার পদে। প্রতিদিন অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে খিলগাঁও থেকে ইফতারি কিনে নিয়ে যান তিনি। বলেন, এখানে চাহিদামতো সব ধরনের ইফতারি পাওয়া যায়। স্বাদও অসাধারণ। তাই ইফতারি কেনার জন্য আমার প্রথম পছন্দ খিলগাঁওয়ের ইফতারির বাজার।
বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করতে এসেছেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অথৈ। তিনি বলেন, ইফতার আর আড্ডা দেওয়ার জন্য নির্ঝঞ্ঝাট একটি জায়গা খুঁজছিলাম। খিলগাঁওয়ের এ রেস্তোরাঁগুলোতে কোনো ঝামেলা ছাড়াই ইফতার করে দীর্ঘ সময় আড্ডা দেওয়া যায়।
ব্যাসিলিকো রেস্তোরাঁর ম্যানেজার আরমিস বলেন, ছুটির দিনগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়েও খেতে আসেন অনেকে। রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে ইফতার করতে আসা মানুষের ঢল সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়।
খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের ভেতরে বাহারি রকমের ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন কিং সিটি ফাস্টফুড দোকানের কর্মীরা। কথা হয় দোকানটির পরিচালনার দায়িত্ব থাকা মাহথিরের সঙ্গে। তিনি জানান, তালতলা মার্কেট ইফতারের জন্য বরাবরই বিখ্যাত। এখানে নানা রকমের ভিন্ন স্বাদের খাবার পাওয়া যায়। সবেমাত্র রমজানের শুরু তাই বিক্রি আশানুরূপ নয়। তবে আশা করছি কয়েকদিন পর থেকেই বিক্রি বাড়বে।